1. support@dainikcumilla.com : Dainik Cumilla : Dainik Cumilla
  2. ghossaintamzid@gmail.com : Habibur Monna : Habibur Monna
  3. admin@dainikcumilla.com : unikbd :
কুমিল্লা জেলায় বন্যায় ক্ষতি প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার - Dainik Cumilla
রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ০৩:৩১ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
চৌদ্দগ্রামে কনকাপৈত ইউনিয়নে ০৯নং ওয়ার্ড বিএনপি’র দোয়া ও ইফতার মাহফিল মাহে রমজান সংযম, ত্যাগ, ধৈর্য্য ও শৃঙ্খলার শিক্ষা দেয়: সফিকুর রহমান ব্রাহ্মণপাড়ায় শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ইফতার ও দোয়া মাহফিল কুমিল্লায় ৩ কোটি টাকার ভারতীয় অবৈধ আতশবাজি আটক কুমিল্লা আলিয়া কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মুফতি আব্দুল মতিনের প্রথম জানাজায় মুসল্লিদের ঢল ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটার (ভিসিটি)’র ইফতার মাহফিল সম্পন্ন মনোহরগঞ্জের বিপুলাসারে চাঁদা না পেয়ে প্রবাসীর উপর হামলা কুমিল্লায় বিজিবি’র অভিযানে ১ কোটি ১৯ লক্ষ টাকার অবৈধ ভারতীয় বাজি জব্দ নাঙ্গলকোটে ধর্ষণ মামলায় যুবলীগ নেতা শ্রীঘরে বিএনপির বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রোপাগান্ডা হচ্ছে। যারা লুটপাট করছে তাদের কথা আসছে না -বরকত উল্লাহ বুলু

কুমিল্লা জেলায় বন্যায় ক্ষতি প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার

  • প্রকাশিতঃ রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৫৪ বার পঠিত

নেকবর হোসেন
কুমিল্লায় স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় জেলায় ৩ হাজার ৩৬২ কোটি ১৪ লাখ ৭৩ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কার্যালয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে বুড়িচং ও নাঙ্গলকোট উপজেলা।
সূত্র মতে, কুমিল্লা জেলায় ৮ হাজার ৬৭৪টি ঘর সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ঘরের পরিমাণ ৭৪ হাজার ৮১টি। এর মধ্যে বুড়িচং উপজেলাতেই সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৪ হাজার ১৪৩টি ঘর। সব মিলিয়ে কুমিল্লায় ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ির পরিমাণ ৮২ হাজার ৭৫৫টি।
জানা গেছে, জেলার ১৭টি উপজেলার মধ্যে ১৪টি উপজেলা বন্যাকবলিত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উত্তরের বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়া, দেবিদ্বার উপজেলা এবং দক্ষিণের নাঙ্গলকোট, লাকসাম, মনোহরগঞ্জ এবং চৌদ্দগ্রাম উপজেলা। শুধু কুমিল্লা অঞ্চলের ভারতীয় ঢল এবং নদীর বানের পানি যে কুমিল্লায় প্রভাব ফেলেছে এমন নয় বরং নোয়াখালী-ফেনীর বন্যার পানির প্রভাবে দীর্ঘদিন তলিয়ে আছে দক্ষিণাঞ্চল। বন্যার সময় যত দীর্ঘ হচ্ছে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তত বাড়ছে। পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে দৃশ্যমান হচ্ছে ক্ষত।
এবারের বন্যায় প্লাবিত কৃষিখাত, মাছের ঘের, প্রাণিসম্পদ, রাস্তাঘাট ও ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি মিলিয়ে কুমিল্লাজুড়ে অন্তত ৩ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয়ের তথ্য মতে, ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১৯ আগস্ট থেকে অব্যাহত বৃষ্টি ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পানিতে কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলা বন্যায় প্লাবিত হতে থাকে। এরপর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বন্যার ভয়াবহতা বাড়তে থাকে। ২২ আগস্ট রাত সাড়ে ১১টায় গোমতী নদীর বাঁধ ভেঙে যায়। এতে বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় প্লাবিত হয়ে তলিয়ে যায় মানুষের ঘরবাড়ি, বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা। দিশাহারা মানুষজন সহায়–সম্বল হারিয়ে ঘর ছেড়ে আশ্রয় নেয় আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি কিংবা আশ্রয়কেন্দ্রে। অনেকে খোলা আকাশের নিচেও বসবাস করতে শুরু করে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ের সূত্র মতে, চলমান বন্যায় কুমিল্লায় মোট ২৩ হাজার ৪২টি খামার বা পুকুর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ২৫ হাজার ৫৩৮ দশমিক ৫০ টন ফিনফিশ, ১০ দশমিক ২৮ টন চিংড়ি, ১০ কোটি ১৭ লাখ সংখ্যক পোনামাছের ক্ষতি হয়েছে। যার বর্তমান বাজারমূল্য হিসাবে ৩৫৮ কোটি ১২ লাখ টাকা, চিংড়িতে ৫ কোটি টাকা, ১৭ কোটি ৮ লাখ ৯২ হাজার টাকার পোনাজাতীয় মাছের ক্ষতি হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র মতে, কৃষিতে ভয়াবহ ক্ষতি হয়েছে। রোপা আমনের বীজতলা, রোপা আমন, শাক-সবজি, রোপা আউশ ও আখের উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়েছে। কুমিল্লা জেলায় আবাদ করা জমির পরিমাণ ১ লাখ ৩৫ হাজার ২৩৮ হেক্টর। যার মধ্যে ৬৩ হাজার ৯৭৪ হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবমিলিয়ে প্রায় ৮০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
জেলায় কৃষি ও মৎস্যর পাশাপাশি প্রাণিসম্পদেরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, প্রাথমিক তথ্যে এই খাতে মোট ক্ষতি ৩০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। তবে এই ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বেলাল হোসেন জানান, কুমিল্লায় বন্যায় মৎস্য খাতে ক্ষয়-ক্ষতির প্রাথমিক একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। সেই হিসাবে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। বন্যার পানি নেমে গেলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সঠিকভাবে বলা যাবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর কুমিল্লার উপ-পরিচালক আইউব মাহমুদ বলেন, ‘এবারের বন্যায় কুমিল্লায় কৃষকরা প্রচুর ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কৃষি প্রণোদনা, বিনামূল্যে সার ও বীজ বিতরণ, ক্ষুদ্রঋণ নেওয়ায় সহায়তা, বিনামূল্যে কৃষিসেবা ও সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।’
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা চন্দন কুমার পোদ্দার বলেন, ‘জেলায় চার হাজারেরও বেশি গবাদিপশুর খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ২ লাখ ৯ হাজার বিভিন্ন জাতের গবাদিপশু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে গরুর সংখ্যা ১ লাখ ২০ হাজার, ১৬টি মহিষ, ৩০ হাজার ছাগল ও ৭০০ ভেড়া। তার মধ্যে মারা গেছে ৩৫টি গরু, তিনটি মহিষ, ১৭১টি ছাগল এবং সাতটি ভেড়া।’
চন্দন কুমার পোদ্দার আরও বলেন, ‘এছাড়া ২ হাজার ২১৮টি খামারে ১৩ লাখ ৬৬ হাজার হাঁস-মুরগি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মারা গেছে ১০ লাখ ২২ হাজার মুরগি এবং ২ সহস্রাধিক হাঁস। এটি আমাদের চূড়ান্ত তালিকা নয়। প্রাথমিকভাবে তালিকাটি তৈরি করা হয়েছে। বন্যার পানি নেমে গেলে সম্পূর্ণ ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে পরবর্তীতে চূড়ান্ত তালিকা প্রণয়ন করা হবে।’

শেয়ারঃ

এই জাতীয় অন্যান্য সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫ | দৈনিক কুমিল্লা    
Developed By UNIK BD