মোঃ রেজাউল হক শাকিল।।
মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসবগুলোর মধ্যে ঈদুল ফিতর অন্যতম। এই পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার কাপড় দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা নানা শ্রেণিপেশার ক্রেতাদের পদচারণায় মুখরিত উপজেলার সব মার্কেট। দরদাম করে নিজ নিজ পছন্দের জামাকাপড় কিনছেন ক্রেতারা।
দেশীয় কাপড়ের পাশাপাশি ইন্ডিয়ান ও চায়না কাপড়ের প্রতি আগ্রহ বেশি ক্রেতাদের। ভিড় লক্ষ করা গেছে পাঞ্জাবির দোকানেও। তবে শবেবরাতের পর এই ভিড় আরও বাড়বে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর বেচাকেনা ভালো হবে বলে আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলা সদরের ব্যাপারী মার্কেট ও রশীদ মার্কেটের কাপড়ের দোকানগুলোতে ভিড় করছেন নানা শ্রেণিপেশার ক্রেতা। কেউ এসেছেন একা, কেউ কেউ সপরিবারে আবার কেউ এসেছেন সবান্ধবে। শিশুদের জামাকাপড়ের পাশাপাশি বয়স্কদের কাপড় ও পাঞ্জাবি কেনায় ব্যস্ত ক্রেতারা। বিভিন্ন দোকান ঘুরে ঘুরে নিজেদের পছন্দের কাপড় বেছে নিচ্ছেন ক্রেতারা। তবে পরিবারের সদস্যদের চাহিদা মেটাতে কাপড় দরে হিমশিম খাচ্ছেন নিম্ন আয়ের ক্রেতারা। এবার ঈদে জামাকাপড় ও পাঞ্জাবিতে দেওয়া নামের নতুনত্বে আগ্রহ বেশি ক্রেতাদের। এদিকে ঈদকে সামনে রেখে বাহারি জামাকাপড় ও পাঞ্জাবির পসরা সাজিয়ে বসে আছেন বিক্রেতারা। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন ভিড় থাকলেও উল্লেখযোগ্য হারে হচ্ছে না বেচাকেনা।
কাপড় কিনতে আসা শারমিন সুলতানা বলেন, ঈদ সামনে রেখে দোকানগুলোতে এ বছর জামাকাপড়ের দোকানগুলোতে নতুন নতুন ডিজাইনের সংগ্রহ ভালো। মানসম্মত কাপড়েরও ভালো সংগ্রহ রয়েছে। তবে দোকানিরা দাম তুলনামূলক বেশি চাচ্ছেন। আমার বাবার জন্য পাঞ্জাবি-পায়জামা কিনেছি। পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের জামাকাপড় এখনো কেনা হয়নি। ঘুরে ঘুরে দেখছি, পছন্দ ও দামে বনে গেলে কিনবো, না হয় আবার অন্য দিন আসব।
পাঞ্জাবি কিনতে আসা মোহাম্মদ হাসান বলেন, এ বছর ঈদ বাজারে নতুন নতুন নাম ও ডিজাইনের পাঞ্জাবি তুলেছেন দোকানিরা। তবে এসব পাঞ্জাবির দাম অনেক বেশি। কয়েকটি দোকানে ঘুরে দেখেছি, পছন্দমতো পাঞ্জাবি পেয়েছি, তবে বাজেটের মধ্যে না থাকায় এখনো কিনতে পারিনি।
আরেক ক্রেতা রোজিনা আক্তার বলেন, কয়েকটি দোকান ঘুরে ৩ বছর বয়সী আমার মেয়ে ইসরাত ফারিয়ার জন্য একটি জামা কিনেছি। পরিবারের অন্য সদস্যদের জন্য আরও কিছুদিন পরে কিনব।
কাপড় বিক্রেতা মাহবুব আলম বলেন, ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে আমরা নানা বয়সী মানুষের পছন্দের বিষয়টি মাথায় রেখে মানসম্মত জামাকাপড় ও পায়জামা-পাঞ্জাবি সংগ্রহ করেছি। ইতোধ্যে ক্রেতা সমাগম লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে ক্রেতাদের উপস্থিতি অনুযায়ী বেচাকেনা হচ্ছে না। অনেকেই ঘুরে ঘুরে দেখছেন। আশা করছি ঈদ ঘনিয়ে এলে বেচাকেনা আরও বাড়বে।
উপজেলা সদর এলাকার রশীদ মার্কেটের কাপড় দোকানি খোরশেদ আলম বলেন, রমজানের শুরুর দিকে বেচাকেনা ছিল না বললেই চলে। তবে এখন ক্রেতা উঠতে শুরু করেছে। মোটামুটি বেচাকেনা হচ্ছে। শিশুদের জামাকাপড় বেশি বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি এ বছর পাঞ্জাবিরও চাহিদা রয়েছে।
ব্রাহ্মণপাড়া পশ্চিম বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজল সরকার বলেন, কাপড়ের দোকানগুলোতে লোকসমাগম হচ্ছে এবং বেচাকেনাও হচ্ছে। কোনো দোকানি যেন মনগড়া দাম না নেয় সে বিষয়ে আমরা তৎপর আছি। এ ধরনের অভিযোগ পেলে ওই দোকানির বিরুদ্ধে সাংগঠনিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।