1. [email protected] : Dainik Cumilla : Dainik Cumilla
  2. [email protected] : Habibur Monna : Habibur Monna
  3. [email protected] : unikbd :
ব্রাহ্মণপাড়ায় তিন কাঁঠাল গাছ হাজারো চড়ুইয়ের অভয়াশ্রম - Dainik Cumilla
বৃহস্পতিবার, ০৭ অগাস্ট ২০২৫, ০৮:২২ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
ঢাকাস্থ বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া উন্নয়ন সংস্থার মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত কুমিল্লা-৯ নির্বাচনি আসন পুনর্বহাল ও খসড়া বাতিল দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে নাঙ্গলকোটে বিএনপির বিজয় র‌্যালী বুড়িচংয়ে মসজিদে নামাজরত যুবককে ছুরিকাঘাত: অভিযুক্ত ২ জন গ্রেপ্তার নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিন হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন আগামী দিনের বাংলাদেশ কীভাবে চলবে তা নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও জনপ্রতিনিধিরাই ঠিক করবেন: ডা. জাহিদ হোসেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে লাকসামে জামায়াতের গণমিছিল বৃষ্টি উপেক্ষা করে হাজারো নেতাকর্মীর অংশগ্রহণ চৌদ্দগ্রামে জুলাই শহীদ জামশেদ ও মাওলানা শাহাদাতের কবর জিয়ারত করলো জামায়াত নাঙ্গলকোটে বৃষ্টিতে ভিজে জামায়াতের গণমিছিলে জনতার ঢল চৌদ্দগ্রামে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে জামায়াতের গণমিছিল

ব্রাহ্মণপাড়ায় তিন কাঁঠাল গাছ হাজারো চড়ুইয়ের অভয়াশ্রম

  • প্রকাশিতঃ রবিবার, ১২ নভেম্বর, ২০২৩
  • ৩৩৫ বার পঠিত

মোঃ রেজাউল হক শাকিল।।

সাহেবাবাদ ডিগ্রি কলেজ সংলগ্ন কুমিল্লা-মিরপুর সড়কের পাশের কাঁঠালগাছের পাতার ফাঁকে অসংখ্য চড়ুই পাখি।
সাহেবাবাদ ডিগ্রি কলেজ সংলগ্ন কুমিল্লা-মিরপুর সড়কের পাশের কাঁঠালগাছের পাতার ফাঁকে অসংখ্য চড়ুই পাখি।

কবি রজনীকান্ত সেনের সেই বিখ্যাত উক্তি ‘বাবুই পাখিরে ডাকি, বলিছে চড়াই, কুঁড়ে ঘরে থেকে কর শিল্পের বড়াই; আমি থাকি মহাসুখে অট্টালিকা ‘পরে, তুমি কত কষ্ট পাও রোদ, বৃষ্টি, ঝড়ে।’ না, চড়ুই এখন আর অট্টালিকা বা বসতবাড়ি কিংবা ঘরের কোণে নয়, ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সাহেবাবাদ ডিগ্রি কলেজ সংলগ্ন কুমিল্লা-মিরপুর সড়কের পাশের তিনটি কাঁঠাল গাছে।

ওই গাছগুলোতে হাজারো চড়ুই পাখি আছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। পাখিগুলোর কিচিরমিচির শব্দ আর কলকাকলিতে সকাল-বিকেল মুখরিত থাকে পুরো এলাকা। পাখির প্রতি ভালোবাসার টানে প্রতিদিন ভিড় করছেন পাখিপ্রেমীরা। পাখিদের আবাসস্থল নিরাপদ করতে কাজ করছেন স্থানীয়রা। তারা পাখিদের খাবারের জোগানও দিচ্ছেন। ফলে ওই এলাকাটি ছোটখাটো একটি পর্যটনকেন্দ্রে রূপ নিয়েছে। পাখিগুলো সংরক্ষণের দাবি স্থানীয়দের।

সরেজমিনে দেখা গেছে, কুমিল্লা-মিরপুর সড়কের সাহেবাবাদ ডিগ্রি কলেজের মূল ফটকের সামান্য দক্ষিণে সড়কের পাশের স্থানীয় একটি মার্কেটের সামনে লাগানো তিনটি কাঁঠাল গাছের শাখায় শাখায় ও পাতায় পাতায় ঝুলে আছে রজনীকান্ত সেনের বিখ্যাত ছড়ার সেই চড়ুই পাখিগুলো। কিচিরমিচির শব্দ করে পাতার ভাঁজে ভাঁজে বসে আছে পাখিগুলো। উড়ে যাচ্ছে এডাল থেকে ওডালে। এ যেনো এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য । যারা মহাসুখে অট্টালিকায় থাকার কথা সেই চড়ুই এখন আশ্রয় খুঁজে নিয়েছে গাছে গাছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, প্রায় এক বছর ধরে বিকেলের নির্দিষ্ট সময়ে পাখিগুলো দলবেঁধে ওই কাঁঠাল গাছগুলোতে এসে আশ্রয় নেয়, আবার ভোরের নির্দিষ্ট সময়ে দলেবেঁধে উড়ে যায় খাদ্যের সন্ধানে। দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন পাখির কলরব শুনতে এবং দেখতে পাখিপ্রেমীরা। দুদণ্ড দাঁড়িয়ে প্রাণ ভরে অবলোকন করছেন পাখিদের জীবনের গান আর ওড়াউড়ির মনোমুগ্ধকর দৃশ্য।

পাখি দেখতে আসা দর্শনার্থীরা জানান, এতো এতো চড়ুই একসঙ্গে কোলাহল করছে দেখতে ও শুনতে বেশ ভালে লাগছে। আমরা প্রায়ই পাখিগুলোর কলকাকলি শুনতে ও পাখিগুলোর দলবেঁধে উড়ার দৃশ্য দেখতে এখানে আসি। এগুলো বেশ ভালো লাগে।

পাখি দেখতে আসা গোলাম রসুল বলেন, অন্য অনেক পাখিও বিচ্ছিন্নভাবে বা ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে ওড়াউড়ি করছে। কিন্তু কয়েকটি গাছে একসঙ্গে এত চড়ুইয়ের অবস্থান এই স্থানের সৌন্দর্য অনেকখানি বাড়িয়ে দিয়েছে। চড়ুইগুলো ঘিরে গোটা এলাকায় যে প্রাণচাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে তা সাধারণ মানুষের ভেতরেও এক ধরনের সুখানুভূতির জন্ম দিচ্ছে, জীবনীশক্তির সঞ্চার করছে। চড়ুইগুলো সংরক্ষণের বিষয়ে জোর দেন তিনি।

স্থানীয় বাসিন্দা ও ওই মার্কেটের ব্যবসায়ী মাহী ভেরাইটিজ স্টোরের মালিক মামুন অর রশীদ মামুন বলেন, প্রায় এক বছর হবে পাখিগুলো এই কাঁঠাল গাছগুলোতে এসে আশ্রয় নিয়েছে। অনুমান করা হচ্ছে প্রায় তেরো হাজার পাখি আছে এই চার গাছে। ওরা নির্দিষ্ট সময়ে আসে, আবার কোথায় যেন চলে যায়। এদের কিচিরমিচির শব্দ মনকে ভরিয়ে তোলে। তাই এইসব পাখিগুলোকে যাতে কেউ বিরক্ত না করে সে ব্যাপারে আমরা সজাগ থাকি। এদের খাবার জোগান দিতে ভোরে ও বিকেলে খাবার দিই। গেল এক বছর ওদের সাথে সময় দিতে দিতে ওরা আমাদের আপন হয়ে গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ওই মার্কেটের নৈশপ্রহরী ফরিদ মিয়া বলেন, পাখি গত এক বছর যাবত এই কাঁঠাল গাছগুলোতে এসে আশ্রয় নিয়েছে। এরা সকালে ঝাঁকবেঁধে উড়ে পাশের বিদ্যুতের তারে বসে, তারপর চতুর্দিকে ছিটিয়ে যায়। ঠিক সন্ধ্যার আগে আগে আবার ফিরে আসে। এদের পাশাপাশি থাকতে থাকতে আমরা এদের আপনজন হয়ে গেছি।

প্রাক্তন স্কুলশিক্ষক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, পাখি প্রাকৃতিক সম্পদ। পাখিদের বসবাসযোগ্য অভয়াশ্রমের ব্যবস্থা করে দেওয়া সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে মানুষেরই গুরুদায়িত্ব। অনেক শব্দ বিরক্তিকর হলেও পাখপাখালির কলকাকলি শুনতে বিরক্তি ভাব আসে না, বরং ভালো লাগে। আমাদের ছেলেবেলায় ভোরে ঘুম ভাঙত পাখিদের ডাকে। দিন দিন গাছের সংখ্যা যতই কমছে ততই পাখিদের আবাসস্থলও কমছে। এতে করে অনেক জাতের পাখি বিলুপ্ত হয়ে পড়ছে। প্রকৃতিকে ভালো বাসলেই পৃথিবী সুন্দর হয়ে উঠবে।

পাখিপ্রেমী ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু হাসনাত মো. মহিউদ্দিন মুবিন বলেন, ভোরে ও বিকেলের সময় পাখির কলরব সত্যিই মনোমুগ্ধকর। অবাদে গাছগুলো কেটে ফেলার কারণে পাখিদের নিরাপদ আশ্রয়স্থলের সংখ্যা দিন দিন কমে আসছে। এ রকম পাখির শব্দ কোথাও এখন আর তেমন পাওয়া যায় না। প্রকৃতি ও পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং পাখিদের অভয়াশ্রম তৈরি বাস উপযোগী বেশি বেশি গাছ লাগানোর উদ্যোগ নিতে হবে।

শেয়ারঃ

এই জাতীয় অন্যান্য সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫ | দৈনিক কুমিল্লা    
Developed By UNIK BD