মোঃ রেজাউল হক শাকিল।।
ধানের জমিতে ধান উৎপাদনের প্রধান অন্তরায় ক্ষতিকারক পোকামাকড় দমনে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় প্রাকৃতিক পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহারে ঝুঁকছে চাষিরা। এতে সুফলও পাচ্ছেন অনেক চাষি। ফলে আমন মৌসুমে এই পদ্ধতি অনুসরণ করছেন উপজেলার অনেক আমন চাষি।
উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে এমন দৃশ্যই দেখা গেছে । পার্চিং পদ্ধতি ও এর ব্যবহারের উপকারিতা সম্পর্কে উপজেলা কৃষি বিভাগ জানান, বাঁশের কঞ্চি, গাছের ডাল, টি আকৃতির দণ্ড বা বাঁশের জটা প্রভৃতি খাড়াভাবে জমিতে পুঁতে পাখি বসার ব্যবস্থা করা হয়, আর তাকেই পার্চিং বলে। বর্তমানে ধানের জমিতে পোকামাকড় দমনে এটি একটি কার্যকরী ও সফল কৃষকবান্ধব পদ্ধতি। পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করলে কৃষককে ধান চাষে অতিরিক্ত খরচ গুণতে হয় না। কৃষকের বাড়ির আঙিনায় বা রাস্তার ধারে গাছের ডাল প্রাপ্তি সহজলভ্য বিধায় পার্চিং পদ্ধতি জনপ্রিয়তা পাচ্ছে সারা উপজেলায়। ধান ক্ষেতের পোকা দমনের জন্য কৃষক ব্যাপক হারে কীটনাশক ব্যবহার করে থাকেন। এতে করে কিছু উপকারী পোকাও মারা যায় এবং কীটনাশক মানবদেহের জন্যও অনেক ক্ষতিকর। পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করলে জমিতে কীটনাশক ব্যবহারও কম হয়। এই পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করে কৃষক সুন্দর এবং স্বাস্থ্যসম্মত খাবার উৎপাদন করতে পারে।
উপজেলার মালাপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব চন্ডিপুর এলাকার কৃষক বজলু মিয়া বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের কথামতো পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার শুরু করে উপকৃত হচ্ছি। এই পদ্ধতি অনুসরণ করায় জমিতে বিভিন্ন রকম পাখি বসে। ফসলে আক্রমণ করা পোকাদের ওরা খেয়ে ফেলে। এতে ফসলে বিষ প্রয়োগের তেমন বেশি প্রয়োজন হচ্ছে না।
উপজেলার সিদলাই ইউনিয়নের সিদলাই মধ্যপাড়া এলাকার কৃষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পার্চিং একটি ফলপ্রসূ পদ্ধতি। এটা ব্যবহার করে চাষের ব্যয় কমিয়ে আনা সম্ভব। কীটনাশকের জন্য টাকা খরচ লাগে না। আমি জমিতে পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মাহবুবুল হাসান জানান, প্রাকৃতিক পার্চিং পদ্ধতিতে ফসলি জমিতে পোঁতা ডালগুলোর ওপর পাখি বসে ফসলি জমির ক্ষতিকারক পোকা ও পোকার ডিম খেয়ে ফেলে। ফলে জমিতে কীটনাশক কম ব্যবহার করতে হয় । যার ফলে কম খরচে অধিক ফলন পাওয়া যায়। তবে সব ধরনের পাখি পার্চিংয়ে বসে না। মূলত ফিঙ্গে, শালিক, বুলবুলি, শ্যামা, দোয়েল, সাত ভায়রা- এসব পাখি পার্চিংয়ে বসে পোকা ধরে খায়। ফসল রোপণের পরপরই পার্চিং স্থাপন করতে হয়।