মোঃ রেজাউল হক শাকিল, ব্রাহ্মণপাড়াঃ
তারুণ্যের উৎসব-২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার শিদলাই নাজনীন হাই স্কুলে তারুণ্যের পিঠা উৎসবে মেতে উঠেছিল শিক্ষার্থীরা। মাঘের শীতকে এক পাশে রেখে শিক্ষার্থীদের বানানো রকমারি পিঠার স্বাদ নিতে স্কুল চত্ত্বরে উপস্থিত বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে পিঠা উৎসবের উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা জাহান। সভাপতিত্ব করেন ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. মফিজুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সৈয়দ ফারহানা পৃথা।
উদ্বোধনী বক্তব্যে ইউএনও মাহমুদা জাহান বলেন, ‘পিঠা উৎসব আমাদের শেকড়ের সঙ্গে সম্পর্কিত। আমাদের লক্ষ্য তরুণ প্রজন্মকে বাংলা সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচিত করা। তারুণ্যের পিঠা উৎসব এই প্রচেষ্টারই একটি উদাহরণ। এরকম আয়োজন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রতি আগ্রহ তৈরি করবে।’
এসময়, উপজেলার ছাতিয়ানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নার্গিস আক্তার, গোলাবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোসা. কুহিনুর আক্তার, নাজনীন হাই স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান, সিনিয়র সহকারী শিক্ষক সৈয়দুর রহমান, ইয়াছমিন আক্তার, সহকারী শিক্ষক মাহাবুব আলম, সফিকুল ইসলাম, নার্গিস আক্তার, মোশারফ হোসেন, কুহিনুর আক্তার, রাকিবুল ইসলাম, উর্মী আক্তার, আনোয়ার হোসেন খান সোহেল, আনিছুর রহমান, সোহেল রানা, অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য গিয়াস উদ্দিন, সাবেক অভিভাবক সদস্য মোশারফ হোসেন, আব্দুল হালিম, গোলাম ছামদানী শিমুল, গাজী জাহাঙ্গীর আলম, আব্দুল মান্নান সরকার প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন। দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করেন সহকারী শিক্ষক রফিকুল ইসলাম পলাশ।
পিঠা উৎসবে ওই স্কুলের ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহনে ১২টি স্টলে প্রায় ৬০ প্রকারের বেশি পিঠার প্রদর্শনী ও বিক্রির আয়োজন করা হয়। নকশি পিঠা, ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, পুলি পিঠাসহ নানা স্বাদের পিঠার ঘ্রাণে মুখরিত ছিল পুরো প্রাঙ্গণ।
শিক্ষার্থীরা বলেন, এই উৎসব আমাদের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বন্ধনকে আরও মজবুত করেছে। পাশাপাশি, আমাদের ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে এবং তা উদযাপন করতে পেরে আমরা গর্বিত। সেই সাথে এ ধরনের উৎসব তারুণ্যের মধ্যে ঐক্য ও সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসা তৈরি করে। এটি আমাদের ঐতিহ্যের সঙ্গে সংযুক্ত থাকার একটি সুন্দর উপায়।
প্রধান শিক্ষক মো. মফিজুল ইসলাম বলেন, তরুণদের মধ্যে হারিয়ে যাওয়া পিঠা সংস্কৃতির পুনর্জাগরণ করতেই এই উৎসব। ভবিষ্যতেও এমন আয়োজনের ধারা অব্যাহত থাকবে।’
উপস্থিত অভিভাবক এবং স্থানীয় বাসিন্দারাও উৎসবের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এ ধরনের উদ্যোগ আগামী প্রজন্মের কাছে ঐতিহ্যকে তুলে ধরার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মত দেন তারা।