মোঃ রেজাউল হক শাকিল।।
মোবাইল ও সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শিক্ষার্থীদের আসক্তি কমিয়ে আনতে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় উপহার হিসেবে বই দেওয়ার প্রতি গুরুত্বারোপ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও ) স ম আজহারুল ইসলাম। শুক্রবার ( ৯ ফেব্রুয়ারি ) দুপুরে তাঁর অফিসিয়াল ফেসবুক একাউন্ট থেকে এ স্ট্যাটাস দেন তিনি। এতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ তাকে সাধুবাদ জানান। পাঠকদের জন্য তাঁর দেওয়া মূল্যবান ফেসবুক স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো। ‘আমি ছাত্রজীবনে ফরিদপুর জিলা স্কুল এবং মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম। আমার দুই স্কুলের কাছেই আমি নানা ভাবে ঋণী। মনে আছে ফরিদপুর জিলা স্কুলে এই জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাস জুড়ে প্রথমে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, তারপর মিলাদ মাহফিল, সবশেষে বার্ষিক সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হতো। এ প্রতিযোগিতাগুলো তে স্যারেরা নতুন লেখক, পুরাতন লেখকদের কয়েক হাজার বই নিয়ে আসতেন। ফরিদপুর শহরে আজ থেকে প্রায় ২৫-২৬ বছর আগের শিক্ষকদের ছাত্র-ছাত্রীদের মানস গড়ার যে প্রয়াস দেখতে পেতাম, এই সময়ে অনেক জায়গায়ই তা অনুপস্থিত পাই। তখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো তে ক্রেস্টের প্রচলন ছিল কেবল কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনায়, কিন্তু কালের বিবর্তনে এখন স্পব কিছুতেই ক্রেস্ট…যে বাজেট থাকে এজন্য তা দিয়ে যে মানের ক্রেস্ট হয় তার মান কোন ভাবেই দীর্ঘস্থায়ী না। আমাদের বাচ্চাদের বই পড়ার, চিন্তা করার অভ্যাসটাও আমরাই এভাবে হারিয়ে যেতে দিয়েছি। তারা এখন আসক্ত মোবাইল, ইন্টারনেট আর সোস্যাল মিডিয়ায়।অথচ এই সময়ে আপনি খেলাধূলা বিষয়ক সুন্দর বই পাবেন, মোটিভেশনাল বই পাবেন, বিভিন্ন স্কিল ডেভেলপমেন্ট বেইজড বই পাবেন, আবার ধর্মীয় বই গুলোও এখন অনেক আধুনিক হয়েছে, বিভিন্ন উৎসের রেফারেন্স এবং তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব নিয়েও লিখা আছে প্রচুর। দু:খের বিষয় আমাদের শিক্ষকগণ কিছু ক্রেস্ট এর দোকানদারের কাছে তাদের দায় টা গছিয়ে দিয়ে নামকাওয়াস্তে একটা কিছুর মাধ্যমে শিশু-কিশোরদের এই সময়টুকুকে পার করিয়ে দিচ্ছেন। এই সময়টা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, মিলাদ মাহফিলের সময়। এসময় আপনারা ঘরে বসে অনলাইনের বিভিন্ন বুকশপ থেকেই বই অর্ডার করতে পারছেন, উপলক্ষ, বয়স, দাম দিয়েও আপনারা বাছাই করতে পারছেন। একটা ক্রেস্ট কারো বাসায় কেবল শোকেসের জায়গা দখল করে কিন্তু একটা বই পাঠকের অন্তরের তৃপ্তির সাথে সাথে অভিজ্ঞতা আর জ্ঞান কে সমৃদ্ধ করে, চিন্তার জগত সম্প্রসারিত করে। তাই অনুরোধ শিক্ষার্থীদের উপহার হিসেবে বই উপহার দিন…উন্নত মানুষ আর মানস গড়ায় আপনার দেয়া একটি বই একটি বিরাট ইমারতের একটি ইটের সমান হয়তো, তবু এই অংশীদারিত্বটুকু আপনার পবিত্র দায়িত্ব।