মুহা. ফখরুদ্দীন ইমন, চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি:
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে নিজঘরে ঝর্ণা আক্তার (৩০) নামে এক মানসিক প্রতিবন্ধী নারীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। ঝর্ণা উপজেলার চিওড়া ইউনিয়নের কবরুয়া গ্রামের মৃত শফিকুর রহমানের মেয়ে। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে এবং লাশের সুরতহাল শেষে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না পাওয়ায় পরিবারের নিকট লাশ হস্তান্তর করে। পরে জানাযা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার চিওড়া ইউনিয়নের কবরুয়া গ্রামে। এ ঘটনায় এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় তথ্যটি নিশ্চিত করেন চৌদ্দগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ত্রিনাথ সাহা।
জানা গেছে, নিহত ঝর্ণা আক্তার দীর্ঘদিন ধরে মানসিক রোগে ভুগছিলেন। মানসিক সমস্যার বিষয়টি জানার পর ঝর্ণার স্বামী তার চিকিৎসা করায়। কিন্তু তাতেও সে সুস্থ না হওয়ায় দুই পরিবারের সম্মতিতে তাদের মধ্যে ছাড়াছাড়ি (তালাক) হয়ে যায়। ভেঙ্গে যাওয়া সে সংসারে তাদের ১২ বছর বয়সী এক পুত্র ও ৮ বছর বয়সী এক কন্যা সন্তান রয়েছে। পরে ঝর্ণা আক্তার তার বাবার বাড়িতে সৎ মা রোকেয়া বেগমের তত্ত্বাবধানে থাকতে শুরু করেন। কিন্তু সেখানে তার কপালে জুটে নানা অবহেলা আর বঞ্চনা। ঝর্ণার বাবার মৃত্যুর পরে একমাত্র ভাইও কাজের সুবাধে ঢাকায় থাকায় তাকে যত্ন নেয়ার মত কেউ ছিলো না বাড়িতে। সৎ মায়ের শত নির্যাতন সহ্য করেও পাড়া প্রতিবেশী এবং সাধারণ মানুষের দয়া-দক্ষিণায় খেয়ে না খেয়ে কোনো মতে তার জীবন অতিবাহিত হচ্ছিল।
গত বুধবার ঝর্ণার সৎ মা রোকেয়া বেগম তাকে শিকল বন্ধী অবস্থায় ঘরে একা রেখে বাবার বাড়ী চলে যায়। এরপর থেকে রোকেয়া বেগম তার কোনো খোঁজখবর রাখেনি। এদিকে ঝর্ণা খাদ্যাভাবে কোনোনএক সময় নিজঘরে মৃত্যু বরণ করে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। পরে শুক্রবার দুপুরে ঘর থেকে লাশ পঁচা দুর্গন্ধ বের হলে স্থানীয়রা ঘরের দরজা ভেঙে নিহত ঝর্ণার লাশ দেখতে পায়। এ সময় তার হাতে পায়ে শিকল বাঁধা ছিলো। সংবাদ পেয়ে চৌদ্দগ্রাম থানার সেকেন্ড অফিসার উপ-পরিদর্শক আলমগীর হোসেন এর নেতৃত্বে উপ-পরিদর্শক জাহিদুল ইসলাম সহ থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশের সুরতহাল করে। এ বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় আইনী প্রক্রিয়া শেষে স্বজনদের নিকট লাশ হস্তান্তর করে পুলিশ।
চৌদ্দগ্রাম থানার সেকেন্ড অফিসার, উপ-পরিদর্শক আলমগীর হোসেন ও জাহিদুল ইসলাম জানান, 'চিওড়া ইউনিয়নের কবরুয়া গ্রামে মানসিক রোগে আক্রান্ত ত্রিশ বছর বয়সী এক নারী নিহত হওয়ার সংবাদ পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরে আইনী প্রক্রিয়া শেষে স্বজনদের নিকট লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।'