মোঃ রেজাউল হক শাকিল।।
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় চলতি রবি মৌসুমে বেড়েছে কাঁচা মরিচের চাষ। বাজার দর ভালো হওয়ায় এবং কম পরিশ্রম ও খরচ তুলনামূলক কম হয় বলে কাঁচা মরিচ চাষে ঝুঁকেছেন অনেক কৃষক। উপজেলার বিভিন্ন রবি শস্যের মাঠ ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, এ বছর রবি মৌসুমে এই উপজেলায় কাঁচা মরিচের লক্ষ্যমাত্রা ৮৫ হেক্টর নির্ধারন করা হয়েছে। উপজেলার মালাপাড়া ইউনিয়নের মালাপাড়া, আসাদনগর, মনোহরপুর, রামনগর, অলুয়া, চন্ডিপুর এলাকায়, শশীদল ইউনিয়নের শশীদল, দক্ষিণ শশীদল, তেঁতাভূমি, নাগাইশ এলাকায় এবং শিদলাই ইউনিয়নের শিদলাই, পোমকারা, বেড়াখোলা, গোলাবাড়িয়া এলাকায় বেড়েছে কাঁচা মরিচের চাষ।
এছাড়াও উপজেলার সদর ইউনিয়নের মহালক্ষীপাড়া, ধান্যদৌল, কল্পবাস, ডগ্রাপাড়া, মাধবপুর ইউনিয়নের মকিমপুর, কান্দুঘর, উত্তর চান্দলা, মাধবপুর এবং চান্দলা ইউনিয়নের বড়ধুশিয়া, দক্ষিণ চান্দলায় তুলনামূলক হারে বেড়েছে কাঁচা মরিচের চাষ।
কৃষি বিভাগ বলছে, কাঁচা মরিচ আবাদ করা কৃষকদের মরিচের ভালো ফলনের দিক মাথায় রেখে নানা পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে এ বছর রবি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কাঁচা মরিচের বাম্পার ফলন হবে।
কাঁচামরিচ আবাদ করা উপজেলার মালাপাড়া ইউনিয়নের রামনগর এলাকার কৃষক আসাদ উল্লাহ জানান, উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী এ বছর তিনি ১৩ শতক জমিতে কাঁচা মরিচের আবাদ করেছেন। বীজ বপনের প্রথমদিকে প্রাকৃতিক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল।তবু এ বছর মরিচের বাম্পার ফলন হবে বলে মনে করছেন তিনি ।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের মহালক্ষীপাড়া এলাকার কৃষক সোহেল হক জানান, গত বছরও তিনি কাঁচা মরিচের আবাদ করে লাভবান হয়ে ছিলেন। এ বছরও তিনি ১৯ শতক জমিতে কাঁচা মরিচের আবাদ করেছেন। বৈরী আবহাওয়ার হাত থেকে রক্ষা পেলে এ বছর কাঁচা মরিচের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
আবুল হাসেম উপজেলার দুলালপুর ইউনিয়নের গোপালনগর এলাকার বাসিন্দা। তিনি এ রবি মৌসুমে অন্যান্য রবিশস্যের পাশাপাশি কাঁচা মরিচেরও আবাদ করেছেন। বাজারে কাঁচা মরিচের চাহিদা ও দাম ভালো থাকায় কাঁচা মরিচ চাষে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন তিনি। এ বছর তিনি ৯ শতক জমিতে কাঁচা মরিচ চাষ করেছেন। এতে শ্রম ও খরচ কম হয়েছে তার। ভালো ফলন হলে তিনি লাভবান হবেন ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মাসুদ রানা বলেন, মরিচ একটি উচ্চমূল্যের ফসল। অন্যান্য ফসলের তুলনায় মরিচ চাষ বেশি লাভজনক। সারাবছরই মরিচের ভালো দাম থাকে। এজন্যই কৃষকরা মরিচ চাষে বেশি আগ্রহী। এছাড়া ব্রাহ্মণপাড়ার মাটি ও পরিবেশ মরিচ চাষের জন্য উপযুক্ত। মরিচ বস্তায় কিংবা টবেও চাষ করা যায়।প্রতিটি পরিবার যদি টবে কিংবা বস্তায় মরিচ চাষ করে তাহলে পরিবারের মরিচের চাহিদা সহজেই পূরন করা সম্ভব। মরিচ চাষের ক্ষেত্রে জাত নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মালচিং পদ্ধতিতে উন্নত জাতের মরিচ চাষে লাভ আরও বেশি হবে।
তিনি আরও বলেন, এ বছর ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার জন্য মরিচ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছে ৮৫ হেক্টর। আশা করা যাচ্ছে যে হারে মরিচ আবাদ করা হয়েছে তাতে এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। উন্নত জাত নির্বাচন, রোগবালাই, পোকামাকড় দমনসহ সব বিষয়ে আমরা কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে আসছি।