মোঃ রেজাউল হক শাকিল।।
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় কলার আড়তগুলোয় কাঁচা কলা পাকানো হচ্ছে বিষাক্ত রাসায়নিক কার্বাইডসহ অন্য রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে। কার্বাইড-জাতীয় রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহারের ১২ ঘণ্টার মধ্যেই কলার বাহ্যিক রং হলুদ ও আকর্ষণীয় হয়ে বিক্রির উপযোগী হয়। এজন্য অসাধু ব্যবসায়ীরা এ পদ্ধতিতেই কলা পাকাচ্ছেন। বিষাক্ত এসব দ্রব্য মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হওয়ার পরও নির্দ্বিধায় ব্যবহারlo#.# করছেন তারা।
সম্প্রতি ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার কয়েকজন ব্যবসায়ীর কার্বাইড দিয়ে কলা পাকানোর দৃশ্য দেখা গেছে। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন কলার আড়ত সহ উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে কলা পাকাতে বিষাক্ত কার্বাইড ও অন্যন রাসায়নিক কেমিক্যাল ব্যবহার করার খবর ও পাওয়া গেছে। ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার কলার আড়তের মালিক জাহাঙ্গীর আলম মিয়াজি বলেন আমি দীর্ঘ ২৪ বছর যাবত কলার ব্যবসা করি আমরা দুই ভাবেই কাঁচা কলা পাকাই কার্বনডাই অক্সাইড পানিতে মিশিয়ে দিলেই কাঁচা কলা অল্প সময়ের পেকে যায়, আবার আগুনে জাক দিয়ে কলা পাকাই দুই ভাবেই আমরা এ কাজ করি। আমরা কাঁচা কলা দেশের বিভিন্ন জেলার মেহেরপুর, রংপুর,টাঙাইল,খাগড়াছড়ি, বগুড়া, জিনাইদা,থেকে কাঁচা কলা ক্রয় করি পরে ডিষ্টিক ট্রাকে করে কাঁচা কলা ব্রাহ্মণপাড়ায় আনি। তিনি আরো বলেন কাঁচা কলা কেমিক্যাল দিলে পাকত এক থেকে দুই দিন লাগে,এবং আগুনে জাঁক দিলে ৩/৪ দিন লাগে।
এ বিষয়ে মোশাররফ হোসেন খান চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে অধ্যক্ষ আলতাব হোসেন বলেন, ক্যালসিয়াম কার্বাইড এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ। এটি এক ধরনের যৌগ যা বাতাসে বা জলীয় দ্রব্যের সংস্পর্শে এলেই উৎপন্ন করে এসিটিলিন গ্যাস। প্রয়োগ করার সময় এসিটিলিন ইথানল নামক বিষাক্ত পদার্থে রূপান্তরিত হয়। বড় সমস্যা হচ্ছে, কার্বাইড কলাকে কাঁচা থেকে পাকা অবস্থায় নিয়ে আসে। কলা কাঁচা কিংবা আধা পাকা অবস্থায় থাকুক না কেন কিছু কিছু কলার বাইরে ও ভেতরে কেমিক্যালের প্রভাব এতটাই ঘটে যে, ভেতরে-বাইরে ফলটির রং ও স্বাদ স্বাভাবিকভাবে পাকা কলার মতো হয়ে যায়। কোনো কোনো কলার বেলায় বাহ্যিক বর্ণ আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। স্বাভাবিক পাকা কলার মতো দৃষ্টিনন্দন হলুদ বর্ণ দেখে মানুষ আগ্রহ করে কৃত্রিমভাবে পাকানো এসব কলা পছন্দ করে কিনে নিয়ে যান। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো তারা হয়তো জানেন না টাকা দিয়ে বিষ কিনে খাচ্ছেন। এতে একদিকে যেমন কলার পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়, অপরদিকে কলা খেতে বিস্বাদ, পানসে, শক্ত ও তেতো স্বাদযুক্ত মনে হয়। কৃত্রিমভাবে পাকানো এসব ফল সহজে চেনার উপায় হলো, কলার ত্বক হলুদ বর্ণের থাকলেও কাণ্ডের অংশ গাঢ় সবুজ রঙের।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবুল হাসনাত মো: মহিউদ্দিন মুবিন জানান, কার্বাইড মানবদেহের জন্য একটি ক্ষতিকর পদার্থ। কেমিক্যালমিশ্রিত কলা অথবা যে কোনো ফল খেলে মানুষ দীর্ঘমেয়াদি নানা রকম রোগ বিশেষ করে বদহজম, পেটের পীড়া, পাতলা পায়খানা, জন্ডিস, গ্যাস্ট্রিক, শ্বাসকষ্ট, অ্যাজমা এবং লিভার ও কিডনি নষ্ট হওয়াসহ ক্যানসারের মতো জটিল রোগে আক্রান্ত হয়। এর প্রভাবে বিকলাঙ্গ শিশুর জন্ম হতে পারে। শিশুরা বিষাক্ত পদার্থের বিষক্রিয়ার ফলে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং গর্ভবতী মায়েদের এবসন পর্যন্ত হতে পারে।
এ ব্যপারে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার স, ম, আজহারুল ইসলাম বলেন, কেমিক্যাল মিশ্রিত কলা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। যারা কেমিক্যালমিশিয়ে কলা বিক্রি করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।