মোঃ রেজাউল হক শাকিল।।
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার দক্ষিণ দুলালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৯৪ সালে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত হয়। এর পরে ২০১৩ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় করণ করেন। সে সময় থেকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান তার ইচ্ছে মত পরিচালনা করছেন উক্ত বিদ্যালয়টি। প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান এর বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। ১৮ ডিসেম্বর বিদ্যালয় খোলার দিন সকাল ৯.৩০ মিনিট থেকে ১২.৩০ মিনিটে প্রতিবেদন ও এলাকাবাসী বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখতে পান বিদ্যালয়টি তালাবদ্ধ। বিদ্যালয়ের আঙ্গিনায় আশপাশের মানুষ ধান শুকাচ্ছে। তখন তারা জানান, বিদ্যালয় প্রায় দিনই মনগড়া মত শিক্ষকরা আসে এবং এ বিদ্যালয়ে তেমন একটা লেখাপড়া হয় না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন আসবাবপত্র ক্রয়ের নামে ভুয়া বিল ভাউচারে ওই প্রধান শিক্ষিক হাতিয়ে নিয়েছেন কয়েক লাখ টাকা। তার বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণপাড়া প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে দু’দফায় তদন্ত হলেও তদন্তকারী কর্মকর্তার রহস্যময় ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। ফলে তদন্তের এ গড়িমসি নিয়ে স্কুল ম্যানেজিং কমিটি ও অভিভাবকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিভাবক জানান, জাতীয় করণের পর থেকে প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান তার ইচ্ছে মত স্কুল পরিচালনা করছেন। কয়েকদিন আগে কাউকে কিছু না বলে বিদ্যালয় থেকে মূল্যবান গাছ কেটে সে নিয়ে যায়। প্রায় দিন বিদ্যালয়ে আসেনা, মাঝে মাঝে আসলেও খাতায় স্বাক্ষর করে স্কুল থেকে বের হয়ে তার ব্যক্তিগত কাজকর্মে ব্যস্ত থাকে। তিনি সঠিক ভাবে স্কুল পরিচালনা না করায় কোমলমতি শিক্ষারর্থীরা স্কুল থেকে ছিটকে পড়ছে। এ ছাড়া নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন তিনি। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। বর্তমানে তিনি ওয়ারেন্ট ভুক্ত আসামি। তিনি নিজে সময় মতো স্কুলে হাজির না হয়ে উল্টো হুমকি-ধমকি দেন সহকারী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এবং অনেকের সাথে সখ্যতা তৈরি করে বিদ্যালয়ে আসতেও বারণ করেন। স্কুলে নিয়মিত হাজির না হলেও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর থাকে তার। শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার সময় ফি বাবদ রয়েছে তার অবৈধ আয়ের আরেক উৎস এবং বিনা মূল্যে বই বিতরণে নেন টাকা । গত এক বছরে তার এসব অনিয়ম ও দুনীর্তির দু’দফায় তদন্ত করে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান বলেন, গত ১৮ ডিসেম্বর আমরা কোন শিক্ষক স্কুলে আসি নাই ঠিকই। এটা আমাদের ভুল হয়েছে। এ কারনে উপজেলা শিক্ষা অফিসার আমাকেসহ সকল শিক্ষককে কারণদর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন। আমার বিরুদ্ধে উপরোক্ত সকল অভিযোগ ঠিক না।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মাসুদ ইবনে হোসাইন বলেন, আমি আপনাদের কাছ থেকে শুনে খবর নিয়ে জানতে পাই সে দিন কোন শিক্ষক বিদ্যালয়ে আসেনি। বিদ্যালয় সম্পূর্ণ তালা ছিল। তাই আমি সকল শিক্ষকদের শোকজ করেছি। আর অন্যান্য অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।