তাপস চন্দ্র সরকার।।
বার কাউন্সিলের বেনেভোলেন্ট ফান্ডে প্রধানমন্ত্রীর কল্যাণ ফান্ড থেকে ৩০ কোটি টাকা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার (২১ অক্টোবর) দুপুরবেলা ঢাকা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আইনজীবী মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ ঘোষণা দেন। বিগত বছরগুলোতে প্রধানমন্ত্রী আইনজীবীদের কল্যাণ ও বিচার বিভাগ সংশ্লিষ্টদের কল্যাণে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। এরআগে প্রধানমন্ত্রী অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধা সংবলিত ১৫তলা বিশিষ্ট বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন করেন। আইনজীবী মহাসমাবেশে সভাপতিত্বে করেন- গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ বার কাউন্সিল চেয়ারম্যান ও অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, বার কাউন্সিলের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ রেজাউর রহমান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র এবং বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সদস্য সচিব শেখ ফজলে নূর তাপস, অ্যাটর্নি জেনারেল ও বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন এবং আইন ও বিচার সচিব মোহাম্মদ গোলাম সারওয়ার প্রমুখ।
ওই সমাবেশে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র ও বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সদস্য সচিব ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস বলেন- আইনজীবীরা আপনার (প্রধানমন্ত্রী) সঙ্গে সবসময় ছিল এবং আছে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘মানবতার উজ্জ্বল নক্ষত্র’ হিসেবে অভিহিত করেছেন মেয়র তাপস। তিনি বলেন, ‘আপনি বাংলাদেশের ন্যায়বিচারের ওপর যে আস্থা রেখেছিলেন, আপনি ৩৪ বছর অপেক্ষা তা প্রমাণ করে দিয়েছেন। আপনি আইনের শাসন রক্ষা করেছেন। আপনি বিচার বিভাগকে রক্ষা করেছে।’ তিনি আরও বলেন- ‘ওয়ান-ইলেভেনের সময় যখন আপনাকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে দিয়েছিল, সেদিন আইনজীবীরা ছুটে গেছেন আদালতে। তখন আইনজীবীরা বলেছিলেন, আইনি লড়াই চালিয়ে যাবো আমরা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মুখলেসুর রহমান বাদল, ফাইন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান রবিউল আলম বুদু, লিগাল এডুকেশন কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুল বাতেন, রোল অ্যান্ড পাবলিকেশন কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুর রহমান, কমপ্লেন্ট অ্যান্ড ভিজিল্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদের রাজা, বার কাউন্সিলের সচিব ডক্টর ওয়াহিদুজ্জামান দার ও উপসচিব মোহাম্মদ আফজাল উর রহমান ও গণপূর্তির প্রকৌশলীসহ বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতারা। এতে সারাদেশ থেকে আগত বঙ্গবন্ধুর আদর্শ অনুসারী প্রায় ১২হাজার আইনজীবী এই মহাসমাবেশে অংশ নেন।জানা যায়- ১৩৭ কোটি টাকা ব্যয়ে আইনজীবীদের জন্য অত্যাধুনিক সুসজ্জিত ভবনটি নির্মিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩সালে বারের জন্য ভবনসহ জায়গাটি দিয়েছিলেন। সেই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় ভবনটি নির্মিত হয়েছে। অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত ১৫তলা বিশিষ্ট বার কাউন্সিলের ভবনটি ১৩৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে। আইন ও বিচার বিভাগের তত্ত্বাবধানে, গণপূর্ত অধিদপ্তরের ব্যবস্থাপনায় ও স্থাপত্য অধিদপ্তরের নকশায় ভবনটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়। এতে রয়েছে পর্যাপ্ত অফিস স্পেস, মিটিং রুম, দুইটি কনফারেন্স রুম, রেকর্ড রুম, স্টোর রুম, ওয়েটিং এরিয়া, ক্যাফেটেরিয়া, ডে-কেয়ার সেন্টার, এক্সিবিশন স্পেস, রিসিপশন, রেজিস্ট্রেশন রুম, ব্যাংক, অ্যাকাউন্টস সেকশন ও আইটি সেকশন ইত্যাদি। আইনজীবীদের জন্য প্রশিক্ষণ কক্ষ, পাঁচটি ট্রাইব্যুনাল কক্ষ, সুপরিসর মাল্টিপারপাস হল, নারী ও পুরুষের জন্য পৃথক নামাজ কক্ষ রয়েছে। এছাড়া, টিভি লাউঞ্জ, কিচেন ও ডাইনিং হলসহ শতাধিক আইনজীবীর থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভবনটিতে চারটি লিফট, ফায়ার ফাইটিং ব্যবস্থা, সিসি ক্যামারা, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এবং পুরুষ-নারী-প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা শৌচাগার রয়েছে। প্রকল্পে আরবরিকালচারের মাধ্যমে ল্যান্ডস্কেপিং করা হয়েছে। এছাড়া নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য সাব-স্টেশন ও জেনারেটরের মাধ্যমে পৃথক বৈদ্যুতিক লাইন সংযুক্ত করা হয়েছে।