তাপস চন্দ্র সরকার।।
ব্যবসায়িক অগ্রযাত্রার ধারাবাহিকতায় সম্মানিত গ্রাহক ও শুভানুধ্যায়ীদের আধুনিক ব্যাংকি সেবা প্রদানের প্রত্যয় নিয়ে কুমিল্লা অঞ্চলের পূবালী ব্যাংক লিমিটেড, জিলা পরিষদ শাখা সোমবার ( ৯ অক্টোবর ২০২৩) কুমিল্লা জেলা আদালত প্রাঙ্গণে "Product Campaign" নামক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত শেষে অতিথিদের ফুললে শুভেচ্ছা জানানো হয়। এরপর অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন- কুমিল্লা অঞ্চল পূবালী ব্যাংকের অঞ্চল প্রধান ও উপ-মহাব্যবস্থাপক মোঃ লতিফুর রহমান। এরপর পূবালী ব্যাংকের প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করেন।
এতে কুমিল্লা অঞ্চল পূবালী ব্যাংকের অঞ্চল প্রধান ও উপ-মহাব্যবস্থাপক মোঃ লতিফুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন- কুমিল্লা বিজ্ঞ সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোঃ হেলাল উদ্দিন এবং বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- কুমিল্লার বিজ্ঞ স্পেশাল জজ (জেলা জজ) বেগম সামছুন্নাহার ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মোঃ আবু তাহের। এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- কুমিল্লা বিজ্ঞ জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী দমন ট্রাইবুনাল এর বিচারক মরিয়ম-মুন-মঞ্জুরী, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ সাউদ হাসান।
সবশেষে সমাপনী বক্তব্য রাখেন- পূবালী ব্যাংক লিঃ জিলা পরিষদ শাখার সহকারী মহা-ব্যবস্থাপক ও শাখা ব্যবস্থাপক মোসাঃ রেহেনা আক্তার। এসময় পূবালী ব্যাংকের প্যানেল আইনজীবী এডভোকেট মোঃ মিজানুর রহমান (৩), এডভোকেট মোঃ হান্নান উদ্দিন আহমেদ, এডভোকেট অশোক কুমার মজুমদার, এডভোকেট মোঃ সামছুল আলম ফারুক ও এডভোকেট স্বর্নকমল নন্দী পলাশসহ কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতির বিজ্ঞ আইনজীবীগণ ও বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা-কর্মচারীগণসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন- পূবালী ব্যাংক লিঃ, কুমিল্লা শাখার সিনিয়র অফিসার নাহিদ আক্তার।
প্রধান অতিথি কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ মোঃ হেলাল উদ্দিন বলেন- ব্যাংক মানুষের কাছ থেকে সুদ নেয়, তারা সুদের ব্যবসা করে এ কথাটা সঠিক নয়। ব্যাংক ছাড়া সমস্ত শিল্প কারখানা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চলতে পারেনা। একসময় ব্যক্তি পর্যায়ে মহাজনি লোন দেওয়া হতো; তখন একশ টাকায় প্রতি মাসে দশ টাকা লোন দেওয়া হতো। একবছরে ১২০ টাকা সুদ দিতে হতো। এটা যদি ৪/৫ বছর চলিতে থাকে তখন তার ভিটেবাড়ি বিক্রি করে সর্বশান্ত হতে হয়। এমনকি দাসত্ব পর্যন্ত করা হতো। এটি ছিল অত্যন্ত ঘৃণিত কাজ ও জঘন্য কাজ। ব্যাংক সম্পর্কে যে নেগেটিভ ধারণা তা পরিবর্তন করা দরকার। শিল্পোন্নত করার জন্য, ব্যবসা বাণিজ্যিকে গতিশীল করার জন্য ব্যাংকিং সেবা অত্যন্ত জরুরি। ব্যক্তিগত পর্যায়েও ব্যাংক নানান ধরনের সেবা দিচ্ছে। পূবালী ব্যাংকের যে সুযোগ সুবিধা রয়েছে তা অনেকেই গ্রহণ করতে পারি। যাদের এ সেবাটার প্রয়োজন হবে তারা পূবালী ব্যাংকে গিয়ে তাদের কি কি সেবাগুলো আছে সরেজমিনে যাচাই করে পছন্দ হলে একাউন্ট খুললে আজকের আয়োজন সফল ও স্বার্থক হবে বলে আমি মনেকরি। তিনি উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে বলেন, পূবালী ব্যাংকে গিয়ে সরেজমিনে যাচাই করে পছন্দ হলে একাউন্ট চালু করে গ্রাহক হবেন। তিনি পূবালী ব্যাংকের কার্যক্রম সম্পর্কে নোট সীট অনুসারে বলেন- পূবালী ব্যাংকের ৫০১টি শাখা রয়েছে। এরমধ্যে ১৭২টি উপ-শাখার মাধমে সেবা প্রদান করছে। পূবালী ব্যাংক গত বছর ১২'শ কোটি টাকা লাভ করেছে এবং মুনাফার দিক থেকে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। আমরা আশা করবো পূবালী ব্যাংকের এ সাফল্য যেন অব্যাহত থাকে। ব্যাংকিং খাতে যত সমস্যা আছে তার মধ্যে অন্যতম একটি সমস্যা হলো খেলাপী ঋণ। এটি একটি জাতির ব্যাধি। আমরা তাদেকে ঘৃণা করি। তাদেরকে কঠিনভাবে আইনের আওতায় আনা উচিত। আমাদের দেশে অনেকেই আছে ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে আর পরিশোধ করেনা। তারা যেনকোন ভাবেই কোনো রাজনৈতিক বা সরকারের কোন আনুকুল্য না পায়। আমি আশা করবো সরকারও এ ব্যাপারে কঠোর হবে। খেলাপী ঋণের যে কালচার আপনারা ইতিমধ্যে পত্র-পত্রিকার মধ্যে জানা যায় বাংলাদেশ দেড় লক্ষ কোটি টাকা ঋণ খেলাপী হয়ে গেছে। খেলাপী ঋণের যে হার সেটি দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ দ্বিতীয় স্থান। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। এটি শিল্প ও ব্যবসা বাণিজ্যের অন্তরায়। পরিশেষে তিনি বলেন- আমি আশা করছি ঋণ খেলাপী কালচারের পরিসমাপ্তি হোক। অনেক সময় ব্যাংক কর্তৃপক্ষেরও গাফিলতি থাকে। তারা যেন যাচাই-বাছাই করে গ্রাহকে লোন দেন। তিনি উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা সবাই সঞ্চয়ী হবেন। সঞ্চয়ের পর যা অবশিষ্ট থাকে তা থেকে ব্যয় করার অনুরোধ জানান কুমিল্লা সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোঃ হেলাল উদ্দিন।
অনুষ্ঠানে সভাপতি তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন- আমরা (পূবালী ব্যাংক) সমাজকে কিছু দিতে চাই। পরীক্ষামুলকভাবে পূবালী ব্যাংকে যাবেন এর সেবা নিবেন। অনলাইন করতে কোন ফি লাগেনা। প্রথম বাংলাদেশে অনলাইন ব্যাংকিং চালু করেছেন। পূবালী ব্যাংক। তিনি আরও বলেন- দেশের সর্ববৃহৎ অনলাইন এখন হাতের মুঠোয়। এরফলে পূবালী ব্যাংক হিসাবে তাৎক্ষণিক অর্থ স্থানান্তর, নিজস্ব হিসাবের তথ্য এবং বিবরণী জানা, তাৎক্ষণিক যেকোনো ব্যাংক হিসাবে অর্থ স্থানান্তর, বিদ্যুৎ বিল, পানি বিল ও বিভিন্ন পরিষেবার বিল প্রদান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের টিউশন ফি প্রদান, মোবাইল ফোন রিচার্জ, নিজস্ব ক্রেডিট কার্ডের তথ্যসহ লেনদেন সংক্রান্ত সুযোগ সুবিধা রয়েছে। তিনি আরও বলেন- দুই কোটি টাকা পর্যন্ত আঞ্চলিক অফিস একজন গ্রাহককে দিতে পারেন। এরজন্য প্রধান কার্যালয়ে অনুমোদন লাগবেনা।