কুবি প্রতিনিধি:
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) আন্তঃবিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্টে মারধরের ঘটনায় মার্কেটিং বিভাগকে ৫ বছরের জন্য বহিষ্কার এবং হামলার সম্পৃক্ততার অভিযোগ এনে ৮ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (২৬ অক্টোবর ২০২৫) ক্রীড়া পরিচালক কমিটির আহ্বায়ক বরাবর এক অভিযোগপত্রে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সাধারণ শিক্ষার্থীরা এ দাবি জানায়।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, গত ২৩ অক্টোবর প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ ও মার্কেটিং বিভাগের মধ্যে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলার দ্বিতীয়ার্ধে দর্শকসারি থেকে মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী শাফায়েত (১৪তম ব্যাচ) মাঠে নেমে এসে গোলকিপার হাসমতের ওপর অতর্কিত হামলা চালান। এক পর্যায়ে তার সঙ্গে যুক্ত হন মার্কেটিং দলের অধিনায়ক মুজিব (মার্কেটিং ১৪তম আবর্তন)। তিনিও কিল-ঘুষি মারতে থাকেন।
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের খেলোয়াড় বরকত (প্রত্নতত্ত্ব ১৯তম আবর্তন) তাদের থামানোর চেষ্টা করলে পেছন থেকে মার্কেটিং দলের খেলোয়াড় শাফিন (মার্কেটিং ১৬তম আবর্তন) তাকে মাথায় আঘাত করেন। গোলকিপার হাসমত সেখান থেকে বাঁচার চেষ্টা করলে মার্কেটিং বিভাগের খেলোয়াড় ইসনাত (মার্কেটিং ১৫তম আবর্তন) তাকে দৌড়ে এসে লাথি মারেন এবং তার সঙ্গে যোগ দেন মার্কেটিং বিভাগের দর্শক হৃদয় (মার্কেটিং ১৯তম আবর্তন), মাহবুব (মার্কেটিং ১৬তম আবর্তন), শাফিন (মার্কেটিং ১৬তম আবর্তন), ইসনাত (মার্কেটিং ১৫তম আবর্তন) ও সাব্বির (মার্কেটিং ১৬তম আবর্তন)। তারা মিলে হাসমতকে মারধর করে মাটিতে ফেলে দেন।
মাটিতে পড়ার পরও অধিনায়ক মুজিব (মার্কেটিং ১৪তম আবর্তন) ও সৌরভ (মার্কেটিং ১৮তম আবর্তন) তাকে অনবরত বুট দিয়ে মাথা, পিঠ ও পায়ে আঘাত করতে থাকেন। পরবর্তীতে হাসমত (প্রত্নতত্ত্ব ১৮তম আবর্তন) ও বরকত (প্রত্নতত্ত্ব ১৯তম আবর্তন) কে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সযোগে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে নেওয়া হয় এবং সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসকের পরামর্শে অধিকতর চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধিনায়ক শাহিনুর রহমান গালিব বলেন, “খেলার মধ্যে প্লেয়ারদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হবেই, কিন্তু দর্শকসারি থেকে মাঠে নেমে প্লেয়ারকে মারধর করা কোনোভাবেই কাম্য নয়। ওই দলের প্লেয়ার থেকে শুরু করে দর্শক সবাই রীতিমতো আমাদের প্লেয়ারদের মারছে। ভিডিওগুলো দেখলেই বোঝা যাবে। এগুলো উল্লেখ করে প্রশাসনের কাছে শাস্তির আবেদন জানিয়েছি — বিশেষ করে শাফায়েত, শাফিন, হৃদয় (১৯ ব্যাচ)। এক কথায়, মোস্ট জুনিয়র থেকে সিনিয়র ব্যাচ—সবাই মেরেছে আমাদেরকে। আমাদের বিভাগের কোনো প্লেয়ারই কারো গায়ে হাত তোলেনি।”
এ বিষয়ে ক্রীড়া কমিটির আহ্বায়ক ড. সোহরাব উদ্দিন বলেন, “মাঠের ঝামেলা নিয়ে তারা আবেদন করেছে। আমরা সেই চিঠিটা গ্রহণ করেছি। ক্রীড়া কমিটি খেলা পরিচালনা করে, কিন্তু মাঠে শৃঙ্খলা ভঙ্গের ঘটনা ঘটেছে — এটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করে দেখা হবে। মাঠের যে ঘটনা ঘটেছে, সেই এভিডেন্স দেখে কমিটি আমাদের রিপোর্ট দেবে, এবং সেই অনুযায়ী প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।”
স্থগিত হওয়া খেলা কবে শুরু হবে—এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “উক্ত সমস্যার সমাধান দ্রুত করেই আমরা বাকি খেলা শুরু করব।”