মুহা. ফখরুদ্দীন ইমন, চৌদ্দগ্রাম প্রতিনিধি:
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলমেন্ট বোর্ড (পিডিবি) এর আওতাধীন বিদ্যুৎ গ্রাহকদের চলতি মাসে চার-পাঁচ গুন বাড়তি ভূতুড়ে বিদ্যুৎ বিল আসার অভিযোগ উঠেছে। ভূতুড়ে বিলের বিরুদ্ধে রবিবার (২১শে সেপ্টেম্বর) সকালে চৌদ্দগ্রাম বাজারস্থ ওয়াপদা অফিসে বিক্ষোভ করেন ভুক্তভোগীরা।
এসময় ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, জোরপূর্বক প্রিপেইড মিটার চাপিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে পোষ্টপেইড মিটারে ভূতুরে বিল করছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পিডিবির চৌদ্দগ্রাম অংশের আবাসিক প্রকৌশলী ওয়াহিদুর রহমান জানান, মিটার রিডারদের অনিয়ম ও দুর্ণীতির কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
বিক্ষোভে অংশ নেন পৌরসদরের শ্রীপুরের ভিক্ষক পেয়ারা বেগম। তিনি জানান, বিগত সময়ে প্রতি মাসে তার বিল আসে ৮০০-৯০০ টাকা। চলতি মাসে তার বিল এসেছে ৮০০০ টাকা। ভিক্ষা করে এই বিল দেয়া তার পক্ষে কোনভাবেই সম্ভভ নয়।
চৌদ্দগ্রাম বাজারের ব্যবসায়ী ও ৬নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা জাকির হোসেন বলেন, বিগত মাসে আমার বিদ্যুৎ বিল আসে ৩৭৭০ টাকা। কিন্তু চলতি মাসে বিল আসে ১৭হাজার টাকা। তিনি আরও বলেন, ওয়াপদা কর্তৃপক্ষ জোরপূর্বক প্রিপেইড মিটার লাগানোর চেষ্টা করেছিল। আমরা ৬নং ওয়ার্ডে প্রি-পেইড মিটার না নেয়ায় তারা এমন বিল করছেন।
একই ওয়ার্ডের বাবুল মিয়া জানান, গত মাসে তার বিল আসে ১৮০২ টাকা। কিন্তু চলতি মাসে বিল এসেছে ৮ হাজার টাকা। মুন্সীরহাট ইউনিয়নের যুগিরহাট গ্রামের শাহআলম জানান, চলতি মাসে তার বিল এসেছে ৯৩৭৩০ টাকা। যা একেবারেই ভূতুরে এবং কাল্পনিক বিল।
চৌদ্দগ্রাম বাজারের জামে মসজিদ সড়কের কহিনুর বেগম জানান, রিডার অনুযায়ী আমার বিল ৩ হাজার থেকে একটি বেশি আসলেও কর্তৃপক্ষ বিল করেছে ৫ হাজারের উপরে।
পিডিবি চৌদ্দগ্রাম অংশের আবাসিক প্রকৌশলী ওয়াহিদুর রহমান বলেন, ভুক্তভোগী গ্রাহকদের অভিযোগ সত্য। মিটার রিডারদের অনিয়ম ও দুর্ণীতির কারণে তারা মিটারের কাছে না গিয়ে গড়ে বিল করতো। যার কারণে গ্রাহকদের এমন বাড়তি বিল এসেছে। আমাদের গ্রাহক রয়েছে অন্তত ২০ হাজার। এর মধ্যে যাদের বিলে সমস্যা হয়েছে আমরা তাদের পূর্বের বিলগুলোও সংগ্রহ করতেছি। নিয়মের মধ্যে যেভাবে গ্রাহকদের সুবিধা দেয়া যায় আমরা বিবেচনা করছি। তিনি আরও বলেন, নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী সকল পোষ্ট মিটারের বিপরীতে প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের জন্য বিগত সময়ের বকেয়া বিল সমন্বয় করা হয়েছে। ফলে বিগত সময়ের সকল বকেয়া বিল একত্রিত হয়ে এমন বাড়তি বিল হয়েছে। আমরা বাড়তি বিল কিস্তি আকারে প্রদানের জন্য গ্রাহকদের সুযোগ দেয়ার চেষ্টা করছি।