নাঙ্গলকোট প্রতিনিধি :
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে মোহাম্মদ এরশাদ নামে এক দুবাই প্রবাসীর নিকট ২০লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার পেরিয়া ইউনিয়নের আশারকোটা গ্রামের বাগান বাড়িতে ওই প্রবাসী বাড়ি নির্মাণ কাজ শুরু করলে এ চাঁদা দাবির ঘটনা ঘটে। ভূক্তভোগী এরশাদ ওই গ্রামের মরহুম নূরুল হকের ছেলে। চাঁদা দাবির ঘটনায় অভিযুক্ত মোহাম্মদ সাদ্দামের বড় ভাই নজির আহম্মেদ ও আবু ইউসুফের দাবি তাদের ছোট ভাই স্থানীয় কিছু দুষ্কৃতিকারীর প্ররোচনায় নিজের আপন ভাইয়ের কাছে এ চাঁদা দাবির ঘটনা ঘটিয়েছে। চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় প্রকাশ্যে ওই প্রবাসীর নির্মাণাধীন বাড়ির বাউন্ডারি ওয়ালের পিলার ভেঙ্গে ফেলে অভিযুক্ত সাদ্দাম। এসময় ভাংচুরের ভিডিও মোবাইল ফোনে ধারণ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে ফোনটি কেড়ে নিয়ে এরশাদকে মারপিট করে সাদ্দাম। সাদ্দামের হাত থেকে এরশাদকে বাঁচাতে তার স্ত্রী দিলরুবা আক্তার সুমি ও বড় ভাই নজির আহম্মেদ এগিয়ে আসলে সাদ্দাম সবাইকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করে এবং এরশাদের স্ত্রীর গলা থেকে দেড় ভরি ওজনের একটি স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় সোমবার নাঙ্গলকোট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভূক্তভোগী প্রবাসী এরশাদ।
অভিযোগ সূত্রে ও প্রবাসী এরশাদ সংবাদিকদের বলেন, আমি আশারকোটা মৌজার ৬ শ’ ৪৭ দাগে আমার ভাই আবু ইউসুফের নিকট থেকে ক্রয়সূত্রে ১৮ শতক জমির মালিক হয়ে ১২বছর যাবৎ ভোগ দখলে আছি। ওই জমিতে আমি বাড়ি নির্মাণ কাজ শুরু করার পর থেকে আমার ছোট ভাই সাদ্দাম জমিটি জোর পূর্বক দখল করার চেষ্টা করে আসছে। সর্বশেষ গত সোমবার আমি ঘর নির্মাণ করতে গেলে সে ২০লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে বাধা সৃষ্টি করে এবং কয়েকটি সদ্য ঢালাইকৃত পিলার ভেঙ্গে পেলে। আমি প্রতিবাদ করলে সে বলে বোনেরা এবং সে এখানে জমি পায় এ জন্য এখানে বাড়ি করতে হলে তাকে চাঁদা দিতে হবে। তখন আমি বলি আইন অনুযায়ী কোন জায়গা পাওনা থাকলে আমি দিয়ে দিবো, কিন্তু কোন চাঁদা দিবো না। এসময় সে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে পিটিয়ে আহত করে। আমাকে বাঁচাতে আসলে সে আমার স্ত্রী ও বড় ভাইকেও আহত করে। এসময় সে আমার স্ত্রীর গলায় থাকা দেড় ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এছাড়াও সাদ্দাম আমার ৪ শতক জমি দীর্ঘদিন যাবৎ দখল করে রেখেছে।
অভিযুক্ত সাদ্দামের বড় ভাই নজির আহম্মেদ বলেন, আমরা ৪ ভাই ও ৪ বোন। আমাদের ভাই আবু ইউসুফ ব্যবসা করতে গিয়ে ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়ায় ২০১৩ সালে আমাদের সকল ভাই-বোনের সম্মতিতে পৈত্রিক সম্পত্তিতে ইউসুফের প্রাপ্য ২৮ শতক সম্পত্তির মধ্যে ১৮শতক জমি অপর ভাই এরশাদের নিকট বিক্রি করি। এরশাদ এখন ওই জমিটিতে মাটি ভরাট করে বাড়ি নির্মাণ করতে গেলে আমাদের সবার ছোট ভাই সাদ্দাম, স্থানীয় কিছু দুষ্কৃতিকারীর সহযোগীতায় ওই জমিতে জায়গা পায় দাবি করে ২০লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছে। অথচ সাদ্দাম তার প্রাপ্য ২৮ শতক জমি সে অন্যান্য দাগে দখলে আছে।
অভিযুক্ত মোহাম্মদ সাদ্দাম বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছে এ গুলো মিথ্যা বানোয়াট। প্রয়োজনে আপনারা আবার আসেন আমি প্রমাণ দিবো।
পেরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সাবেক সদস্য হাজী মফিজুর রহমান বলেন, তারা সব ভাই-বোন ও তাদের মা-সহ ইউসুফকে ঋণ মুক্ত করতে অনেক বেশী দামে এরশাদকে জমিটি ক্রয় করতে বাধ্য করে। ২০১৩ সালে জমিটির যে দাম আসে এরশাদের নিকট থেকে ওই সময় তার মা এবং ভাই-বোনেরা অনুরোধ করে অন্তত আরো ২লাখ টাকা বেশী নিয়েছে। এখন কেন সাদ্দাম নিষ্কন্টক এ জমিটি নিয়ে জামেলা করছে এবং কেন সে টাকা দাবি করছে আমাদের বোধগম্য নয়।
নাঙ্গলকোট থানা অফিসার ইনচার্জ এ কে ফজলুল হক বলেন, অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত চলমান আছে।