সৌরভ লোধ :
“অভয়াশ্রম গড়ে তুলি, দেশি মাছে দেশ ভরি”— এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে কুমিল্লার বরুড়ায় পালিত হয়েছে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২৫। এ উপলক্ষে উপজেলায় বর্ণাঢ্য র্যালি, আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণী, মাছের পোনা অবমুক্তকরণসহ নানা কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে লিফলেট বিতরণ ও বিলবোর্ড স্থাপন করা হয়।
সোমবার (১৮ আগস্ট) সকাল ১১টায় উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে একটি র্যালি বের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পরিষদ মিলনায়তনে এসে শেষ হয়।
অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নু এমং মারমা মং-এর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা বোরহান উদ্দিন, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রতন কুমার সাহা, মৎস্য কর্মকর্তা সুরাইয়া জামান নিতু, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আলী নেওয়াজ প্রমুখ।
এর আগে মৎস্য সেক্টরে বর্তমান সরকারের অগ্রগতি ও সাফল্য নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। পরে মৎস্য খাতে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ উপজেলায় তিনজন সফল মৎস্যচাষিকে জাতীয় মৎস্য পদক প্রদান করা হয়। তারা হলেন— মো. ইয়াসিন মিয়াজি, মো. ইকবাল হোসেন ও আবদুল বাতেন। এরপর উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন পুকুরে মাছের পোনা অবমুক্ত করেন অতিথিরা।
আলোচনা সভায় সাংবাদিক সুজন মজুমদার বলেন, “অভয়াশ্রম গড়ে তুলি, দেশি মাছে দেশ ভরি"—কিন্তু দেশি মাছ বাড়বে কিভাবে, যদি খালে অসংখ্য মাছ ধরার বেল (ফাঁদ) বসানো থাকে। এতে মাছ আটকা পড়ে যায়। আবার মাছের খাদ্যের দামও লাগামহীন। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কার্যকর নজরদারি জরুরি।
অভিজ্ঞ মৎস্যচাষি মোহাম্মদ ইয়াসিন মিয়াজি বলেন, “বর্তমানে মাছ চাষ অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে। আগে কম বিনিয়োগে মাছ চাষ করা যেত, এখন লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। সীমিত বাজেটের মানুষ এ পেশায় টিকে থাকতে পারছে না।”
সভাপতির বক্তব্যে ইউএনও নু এমং মারমা মং বলেন, মাছের খাদ্যে সিন্ডিকেট রয়েছে, আমরা সেটা অস্বীকার করছি না। তবে এ বিষয়ে কাজ চলছে। পাশাপাশি অবৈধভাবে দখলকৃত খালগুলো পুনরুদ্ধারে অভিযান চলছে। মৎস্যচাষিদের বলব, আপনারা হতাশ না হয়ে চাষে লেগে থাকুন। উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য অধিদপ্তর সবসময় আপনাদের পাশে রয়েছে এবং থাকবে।
এ সময় মৎস্য কর্মকর্তা সুরাইয়া জামান নিতু বলেন, খালে মাছ ধরার বেল দেশি মাছের মারাত্মক ক্ষতি করছে। আমরা ইতোমধ্যে ইউপি চেয়ারম্যানদের জানিয়েছি যাতে তারা এসব বেল অপসারণের ব্যবস্থা নেন।