কুবি প্রতিনিধি:
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল সমর্থিত শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইউট্যাব) কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু পরিষদ সমর্থিত শিক্ষকরা স্থান পাওয়ায় বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
গতকাল মঙ্গরবার (১৩ মে) ৯ পদের জন্য ১৩ সদস্য বিশিষ্ট এই কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটির সাধারণ সম্পাদক লোক প্রশাসন বিভাগের মাহিন উদ্দিন কার্যনির্বাহী পরিষদ ২০২১ কমিটির নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি বঙ্গবন্ধু পরিষদের মিটিংয়ে সক্রিয়ভাবে অংশ নিতেন। মিটিংয়ের কিছু ছবি এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।
১ নং সহ সভাপতি অধ্যাপক ড. মো: শাহাদাৎ হোসেন ২০২২ সালে বঙ্গবন্ধু পরিষদ একাংশের কার্যকরী সদস্য পদে মনোনীত হয়েছেন। এছাড়াও তিনি নীল দল সমর্থিত শিক্ষক সমিতির ২০২২ কার্যনির্বাহী কমিটির কার্যকরী সদস্য পদপ্রার্থী ও শিক্ষক সমিতির সর্বশেষ কমিটির সহ সভাপতি ছিলেন।
২ নং সহ সভাপতি মো. জুলহাস উদ্দিন বঙ্গবন্ধু পরিষদ স্বপন- এমদাদ অংশ সমর্থিত শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদ-২০২১-এর নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমানকে বঙ্গবন্ধু পরিষদের একাধিক মিটিংয়ে অংশ নিতে দেখা গেছে।
কোষাধ্যক্ষ মো: আশিকুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পর নন্দী-কামাল অংশে সক্রিয় ছিলেন পরে তিনি গ্রুপ বদল করে মেহেদী-আইনুল গ্রুপ থেকে বঙ্গবন্ধু পরিষদ সদস্য হিসেবে ছিলেন।
যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মশিউর রহমান শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদ-২০২২ নির্বাচনে নন্দী জুলহাস অংশ থেকে কার্যকরী সদস্য পদে নির্বাচন করেন।
বঙ্গবন্ধু পরিষদের কয়েকজন শিক্ষক জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রাজনীতি যদি আদর্শনির্ভর হতো, তাহলে একসময় আওয়ামীপন্থি এবং পরে বিএনপিপন্থি সংগঠনে একই ব্যক্তি নেতৃত্বে থাকতে পারতেন না। বরং এটি একটি গভীর সংকেত, বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন আদর্শ নয়, ‘অবস্থান’ নির্ধারিত হচ্ছে সুবিধার ভিত্তিতে। এই ধরনের দ্বিচারিতা কেবল ব্যক্তিগত নয়, এটি পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিবৃত্তিক পরিবেশকে কলুষিত করছে।
বঙ্গবন্ধু পরিষদের সক্রিয় সদস্য হয়েও ভিন্ন আদর্শের সংগঠনে যুক্ত হওয়া প্রসঙ্গে অধ্যাপক ড. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ুআমি ২০২২ সালের বঙ্গবন্ধু পরিষদের কমিটিতে ছিলাম, তবে ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনের সময় শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী আচরণের প্রতিবাদে পদত্যাগ করি। যদিও লিখিত পদত্যাগপত্র দিইনি, তবে সমস্ত অনলাইন গ্রুপ থেকে সরে যাই।”
এ বিষয়ে ইউট্যাব এর সদস্য অধ্যাপক ড. এম এম শরীফুল করিম বলেন, শাহাদত বঙ্গবন্ধু পরিষদের সদস্য ছিলো এটা জানি। তবে পারিবারিকভাবে বিএনপি ব্যাকগ্রাউন্ডের এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলো।
আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের বিএনপি রাজনীতিতে আশ্রয় দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ইউট্যাবের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, আমরা কেন্দ্র থেকে সব কমিটি তদারকি করতে পারি না। স্থানীয় নেতাদের সুপারিশেই কুবি শাখার কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।”