মো:ওমর ফারুক মুন্সী :
কুমিল্লায় পাওনা টাকায় চাওয়ায় পাওনাদারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন এক নারী। রবিবার সন্ধ্যায় পাওনাদার প্রবাসী আলী আশ্রাফ সংবাদ সম্মেলন এ অভিযোগ জানান। এ সময় তিনি মামলা প্রত্যাহার ও তাঁর পাওনা টাকা পরিশোধের দাবি জানান।
প্রবাসী আলী আশ্রাফ অভিযোগ করে বলেন, দেবিদ্বার উপজেলার ভানি ইউনিয়নের সূর্যপুর গ্রামের মৃত আয়েব আলীর মেয়ে হাসিনা বেগম আমাকে ১শতক রাস্তার জায়গা লিখে দিবেন বলেন আড়াই লক্ষ টাকা নেন। কিন্তু হাসিনা বেগম গত ৬ বছর ধরে জায়গার দলিল না দিয়ে প্রতারণা করে আসছেন। পরে আমি জায়গা না পেয়ে টাকা ফেরত চাই। এ নিয়ে গ্রামে একাধিক সালিস হয়। ওই সালিসে হাসিনা বেগম টাকা ফেরত দিয়ে দিবেন বলে স্বীকার করেছেন। যার লিখিত ডুকোমেন্টসও রয়েছে। সম্প্রতি আমার স্ত্রী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায় তার চিকিৎসার খরচ মেটাতে গ্রামের কয়েকজন গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ নিয়ে হাসিনা বেগমের কাছে পাওনা ফেরত চাইতে গেলে তিনি লোকজন নিয়ে যাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। তাকে প্রথমে গালিগালাজ করতে নিষেধ করা হয়। পরে সে গ্রামের গন্যমান্য ব্যক্তিদের সুদখোর-ঘুষখোর বলে গালাগালি শুরু করে করলে হাসিনা বেগমের প্রতিবেশী চাচা তাকে একটি ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেন। এ ঘটনা দূর থেকে হাসিনা বেগমের মেয়ে ভিডিও করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়। পরবর্তীতে এ ঘটনায় থানা মামলাও করা হয়। গ্রামের একটি চক্র ওই নারীকে ব্যবহার করে আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করিয়েছে। তাকে কোন রকম মারধর বা শ্লীতাহানীর কোন ঘটনা ঘটেনি। এখানে গ্রামের অনেক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাবেক ইউপি সদস্য আবদুল আউয়াল বলেন, এটি কোন রাজনৈতিক বিষয় না। অথচ গ্রামের একটি চক্র এটিকে রাজনৈতিক ফায়দা নিতে ওই নারীকে দিয়ে আমাদের নামে মামলা করিয়েছে। ধাক্কা দিলেই মামলা হয় এটি এ প্রথম দেখলাম। আর যিনি ধাক্কা দিয়েছেন তিনি ওই নারীর সম্পর্কে চাচা হয়। পরবর্তী স্থানীয় বাচ্চু মিয়া নামে অপর আরেক এক প্রতিবেশী ওই নারী গালাগাল করায় আমাদের কাছে ক্ষমা চাওয়ান। বিকালে শুনি এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। ভিডিওতে সবাই দেখেছেন, এখানে কোন রক্তপাত হয়নি, কারও হাতে কোন অস্ত্র ছিলনা, লাঠি নাই কাউকে মারা হলো না তারপরও থানায় মামলা হলো। এটি একটি শক্তিশালী চক্র ওই নারীকে ইন্দন দিয়ে মিথ্যা মামলা করিয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. মনিরুজ্জামান ফরাজী, ভানী ইউনিয়নের যুবদলের সেক্রেটারী ফয়েজ খানসহ গ্রামের বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ।
অভিযুক্ত হাসিনা বেগম বলেন, আলী আশ্রাফ নামের একজনের কাছ থেকে কিছু টাকা আনছিলাম পত্তনে (সুদ)। টাকাটা দিতে পারিনি। ওই টাকার জন্য আমার বসতভিটা লিখে দিতে মনির ফরাজি ও আবদুল আউয়াল বারবার আমাকে চাপ দিচ্ছেন। আমাকে মারধর করেছেন। এ ঘটনায় আমি থানায় একটি মামলা দায়ের করেছি।
কুমিল্লার দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সামসুদ্দীন মোহাম্মদ ইলিয়াস বলেন, হাসিনা বেগম নামের এক নারীকে মারধর ও শ্লীলতাহানীর দায়ে থানায় একটি মামলা হয়েছে। এই ঘটনা তদন্ত করা হচ্ছে।