মুহা. ফখরুদ্দীন ইমন, চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি: কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ফেসবুকে করা মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও জামায়াত সমর্থকদের মাঝে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। এ সময় বেশ কয়েকটি বাড়ীঘর ভাংচুর করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার রাতে উপজেলার আলকরা ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামে। এ ঘটনার প্রতিবাদে বিএনপি-জামায়াত একে অপরকে দোষারোপ করে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিয়েছে। ঘটনার পর থেকে সেখানে তথমমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
এলাকাবাসী জানিয়েছে, ২০২০ সালে উপজেলার আলকরা ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের জামায়াত সমর্থক মো. তারেক চৌধুরীর বিরুদ্ধে একটি ধর্ষণ মামলা হয়েছিল। পুরোনো সেই ফেসবুক পোস্টে একই এলাকার যুবদলকর্মী হৃদয় নতুন করে একটি মন্তব্য করেন। এতে ফেসবুকের সেই পোস্টটি টাইমলাইনে ভেসে উঠে। এ ঘটনার জেরে গত রোববার যুবদলকর্মী হৃদয়কে স্থানীয় লক্ষ্মীপুর বাজারে জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা মারধর করেন। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসার জন্য গতকাল সোমবার রাতে একটি স্থানীয়ভাবে একটি শালিস বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বৈঠকে উভয়পক্ষের কয়েক শতাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত হয়। শালিসে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। তাতে জামায়াত ও বিএনপির অন্তত ২০ জন নেতা-কর্মী আহত হন। এ সময় উভয়পক্ষের সমর্থকদের বেশ কয়েকটি বাড়ীঘর ভাংচুর করা হয়। সংবাদ পেয়ে চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর পৃথক দুটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় স্থানীয়দের সহযোগিতায় আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী মু. বেলাল হোসাইন বলেন, ‘ফেসবুকে করা মন্তব্যকে কেন্দ্র করে এ ঘটনার সূত্রপাত। বিএনপি সমর্থকরা পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করেছে। হামলায় স্থানীয় জামায়াত কর্মী হানিফ, জাহিদ, শাকিল, কুসুম, শরীফ, নাছিরসহ আমাদের অন্তত ১০ জন কর্মী-সমর্থক আহত হন। এছাড়া তারা আমাদের কর্মী-সমর্থকদের বেশ কয়েকটি বাড়ীঘর ভাংচুর করে। এ ঘটনায় আমরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শাহআলম রাজু বলেন, ‘জামায়াত পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী আমাদের নিরীহ নেতা-কর্মীদের উপর হামলা চালিয়ে আলকরায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েমের চেষ্টা করে। শেষ চেষ্টার অংশ হিসেবে সোমবার রাতে আমাদের নিরীহ কর্মীদের ওপর হামলা করে এবং তাদের কয়েকজনের বাড়ীঘরে ভাংচুর চালায়।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চৌদ্দগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দীন আহমেদ জানান, ‘হৃদয় ও মো. তারেক চৌধুরী নিকটতম প্রতিবেশী। ফেসবুকে করা মন্তব্যকে কেন্দ্র করে সংঘঠিত সংঘর্ষের ঘটনাটি এখন রাজনৈতিক রূপ নিয়েছে। সংঘর্ষের সংবাদ পেয়ে সেনাবাহিনী সহ পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’