নিজস্ব প্রতিবেদক ।।
কুমিল্লা নগরীর ১৮নং ওয়ার্ডের হযরতপাড়া এলাকায় পারিবারিক ও প্রতিবেশীদের মধ্যে ভূমি বিরোধকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে মহিলাসহ চারজন আহত হয়েছে। এ বিষয়ে আয়েশা আক্তার কুমিল্লার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার এজহারে পাঁচজনের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, বাদীর সঙ্গে আসামিদের মধ্যে একটি দেওয়ানি মামলা চলমান রয়েছে। আসামিরা অত্যন্ত উশৃঙ্খল প্রকৃতির এবং বাদী ও সাক্ষীদের নানা ভাবে হয়রানি ও অত্যাচার করে আসছে।
মামলার বিবরণে বলা হয়, আসামিরা আইন অমান্য করে পূর্বপরিকল্পিতভাবে রাতের অন্ধকারে তাদের বিল্ডিং নির্মাণ করতে থাকে এবং বাদীর চলাচলের রাস্তার জায়গায় অবৈধভাবে নির্মাণকাজ চালায়। বাদীর ছেলে বিপ্লবসহ অন্যান্য সাক্ষীরা তাদের বাধা দিলে, আসামিরা তাদের উপর হামলা চালায়।
ঘটনার দিন ৮ মার্চ ২০২৫, শনিবার সন্ধ্যা ৭:৪০ মিনিটে, আসামিরা নির্মাণকাজ অব্যাহত রাখলে এবং বাদীর ছেলে বিপ্লব বাধা দিতে গেলে তারা উত্তেজিত হয়ে যায়। এক পর্যায়ে, ২নং আসামি ইয়াসিন মিয়া লাঠি দিয়ে বিপ্লবের বুকে, পিঠে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে মারাত্মকভাবে আঘাত করে। ১নং আসামি ইউসুফ মিয়া বিপ্লবকে হত্যার উদ্দেশ্যে রামদা দিয়ে তার মাথায় গুরুতর জখম করে। বিপ্লবের স্ত্রী উর্মি তাকে রক্ষা করতে গেলে, ৩, ৪ ও ৫নং আসামি জুম্মন, জিসান এবং আসিফ তাকে মাটিতে ফেলে দেয়।
এছাড়া, ৩নং আসামি জুম্মন উর্মির শ্লীলতাহানি করার চেষ্টা করে এবং ৫নং আসামি আসিফ ইট নিক্ষেপ করে বাদীর বাম পায়ে মারাত্মক জখম করে। ৪নং আসামি জিসান বিপ্লবকে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা চালায় এবং একই সময়ে বাদীর গলার স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেয়।
এ ঘটনার পর, আশপাশের লোকজন ছুটে এলে আসামিরা পালিয়ে যায় এবং যাওয়ার সময় বাদী ও সাক্ষীদের হুমকি দেয়। তারা বলে, বাদী ও তার পরিবারের সদস্যদের বাড়িঘর দখল করে নেবে এবং মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করবে।
আহত বিপ্লবকে দ্রুত কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, সেখানে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর মাথায় আটটি সেলাই পড়ে। পরবর্তীতে চিকিৎসা শেষে তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নেন।
এ ঘটনার বিচার দাবিতে ১২ মার্চ কুমিল্লা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন হামলার শিকার হযরতপাড়া এলাকার মোঃ জামাল আহমেদ ও আয়েশা আক্তার। তারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে তাদের পূর্বপুরুষের ভূমি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। প্রতিপক্ষ আদালতের আদেশ অমান্য করে সেখানে অবৈধভাবে ইমারত নির্মাণের চেষ্টা করে এবং বাধা দিলে তাদের ওপর হামলা চালায়। তারা দ্রুত হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবি জানান।