মোঃ রেজাউল হক শাকিল, ব্রাহ্মণপাড়া (কুমিল্লা) প্রতিনিধি।।
জ্বলন্ত চুলায় লাকড়ি দিয়ে চার-পাঁচটি মাটির খোলায় চিতই পিঠা বানাচ্ছেন ইমন মিয়া। চুলার অল্প আঁচে উড়ছে ধোঁয়া। তৈরি হচ্ছে সুস্বাদু চিতই ও ভাপা পিঠা। চুলা থেকে নামানোর পর মুহূর্তেই এসব পিঠা চলে যাচ্ছে অপেক্ষামাণ ক্রেতার হাতে। ক্রেতারা রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে সেই পিঠা কিনছেন। কেউ বা নিয়ে যাচ্ছেন পরিবারের জন্য। কেউ আবার দাঁড়িয়েই খাচ্ছেন।
রাস্তার পাশে ইমনের দোকানে মানুষ পিঠা কেনার জন্য ভিড় জমিয়েছেন। মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সাহেবাবাদ বাজারের প্রবেশ মুখে ব্রীজের উপর এই দৃশ্যের দেখা মেলে।
সেখানকার পিঠা ব্যবসায়ী ইমন বলেন, প্রতিবছর শীত মৌসুম এলে পিঠা বিক্রি করি। এবার প্রায় ১৫-২০ দিন হয়েছে চিতই পিঠা ও ভাপা পিঠা বিক্রি শুরু করেছি। ১০ টাকা করে প্রতি পিস, বিক্রিও খুব ভালো।
হারুন অর রশীদ নামে এক ব্যক্তি ইমনের দোকান থেকে পিঠা কিনে প্রশংসা করে বলেন, এখানকার পিঠার মান ভালো। তাই প্রতিবছরই কিনে থাকি। এবারও কিনেছি।
ব্রাহ্মণপাড়া সদরে আল্লাহর ৯৯ নাম চত্বরে একটি দোকানে ভাপা ও চিতই পিঠা বিক্রি করছেন স্থানীয় এক দম্পতি। তাঁরা জানান, ভাপা ও চিতই পিঠা প্রতিটি ১০ টাকায় বিক্রি করছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পিঠা তৈরির ছাঁচে চালের গুঁড়ি নিয়ে তার ওপর গুড়, নারকেল ছিটিয়ে ভাপে দিচ্ছেন দোকানি। খোলায় বানানো হচ্ছে চিতই পিঠা। সন্ধ্যার পরেই পিঠার দোকানে ভিড় করছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এছাড়াও বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট পিঠার দোকান সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। অনেকে আবার পিঠা বিক্রির দোকান দিয়ে পেশা পরিবর্তন করছেন।
মৌসুমী পিঠা ব্যবসায়ীরা মোড়ে মোড়ে পিঠার দোকান নিয়ে বসে পড়েছেন। আর সাধারণ মানুষও খাচ্ছেন এসব ধোঁয়া-ওঠা গরম পিঠা।
দোকানিরা জানান, খুব বেশি পুঁজি লাগে না বলে সহজে এ ব্যবসা শুরু করা যায়। জ্বালানি হিসেবে খড়ি, অকেজো কাঠের টুকরা, কিংবা গাছের শুকনা ডাল ব্যবহার করছেন তারা। তবে কেউ কেউ আবার পিঠা তৈরি করতে গ্যাসের সিলিন্ডার ব্যবহার করছেন। কিছু গুড়, চাউলের গুড়ি, নারকেল নিয়ে এ ব্যবসা খুলে বসা যায়।
দুলালপুর বাজারের পিঠা বিক্রেতা শাহ আলম বলেন, চিতই ও ভাপা পিঠা বিক্রি করেন তিনি। দামে কম ও মান ভালো হওয়ায় দোকানে প্রায় ক্রেতাদের ভিড় লেগে থাকে।