লাকসাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি:
লাকসাম রেলওয়ে জংশনে ইঞ্জিনের দিক পরিবর্তনকালে লাইনচ্যুত হয়ে চাঁদপুর থেকে চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর মেঘনা ট্রেন আড়াই ঘণ্টা বিলম্বে ছেড়েছে। শুক্রবার সকালে পৌনে সাতটায় ইঞ্জিনটি লাইনচ্যুত হয়।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, চাঁদপুর থেকে ট্রেনটি লাকসাম জংশনে পৌঁছার পর ইঞ্জিন ঘোরানোর জন্য সান্টিং করা হয়। কিন্তু ঘন কুয়াশায় চালক ইঞ্জিনের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললে এঞ্জেলটি লাইনের বাইরে গিয়ে বিকল হয়ে পড়ে। এতে প্রায় সাতশ যাত্রী বিড়ম্বনায় পড়ে। পরে আড়াই ঘন্টা বিলম্বে ট্রেনটি চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে।
এ বিষয়ে লোক মাস্টার (ট্রেন চালক) আনোয়ার হোসেন জানান, অধিক কুয়াশার কারনে সামনে কিছু দেখতে পাইনি। সব সময় ইঞ্জিন মেইন লাইনে দেয়, আমি ভেবেছি আজো মেইন লাইনেই দিয়েছে। কিন্তু পকেট লাইনে দিয়ে তা আমাকে অবহিত করা হয়নি এবং আমার সাথে কোনো পি ম্যানও ছিলো না ফলে আমি মেইন লাইনের গতিতে এগিয়ে যেতে থাকি, কিন্তু পকেট লাইনের শেষ প্রান্তে এসে সামনে লাইন না থাকার কারনে ইঞ্জিনটি লাইন থেকে সীমানা পিলার ভেঙ্গে বাইরে পড়ে যায়। এতে করে প্রায় ৩০ কোটি টাকার ইঞ্জিনটি ক্ষতির মুখে পড়ে।
এ বিষয়ে জানতে লাকসাম জংশন স্টেশন মাস্টার মাহবুবর রহমানের অফিস কক্ষের সামনে গেলে দরজা বন্ধ পাওয়া যায়। পরে তাকে মুঠো ফোনে কল দিলে রিসিভ করে মেঘনার ইঞ্জিন সব সময় মেইন লাইনে দেয়া হলেও আজ পকেট লাইনে দেয়ার কারণ এবং পকেট লাইনে ইঞ্জিন দিলেও পি ম্যান না থাকার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ছুটিতে আছি পরে কথা বলবো বলে লাইন কেটে দেন।
তবে স্থানীয় সূত্রমতে তিনি সকালেও স্টেশনে উপস্থিত ছিলেন।
ট্রেনের যাত্রী আব্দুল্লাহ ফয়সাল জানান, রেলওয়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উদাসীন কর্মকাণ্ডের কারণে রেল প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা লোকসান পোহাতে হচ্ছে। কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঠিক জবাবদিহিতার আওতায় আনলে রেল প্রতিবছর কোটি কোটি টাকার লোকসান থেকে উত্তরণ করে লাভের দেখা পাবে বলে এ যাত্রী মনে করেন।
এ বিষয়ে লাকসামের সিনিয়র ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী-পথ (এসএসএই-ওয়ে) লিয়াকত আলী মজুমদার বলেন, আজকে নিম্নগামী ও ঊর্ধ্বগামী (আপ-ডাউন) উভয় লাইনে ট্রেন থাকায় মেইন লাইনে না দিয়ে মেঘনা ট্রেনের ইঞ্জিন নেক লাইনে দেয়া হয়। পি ম্যান কর্মরত থাকলেও ট্রেনের চালক একাই ইঞ্জিন চালাতে গিয়ে ব্রেক নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় ইঞ্জিনটি ডেথ পয়েন্ট ভেঙে লাইনের বাইরে চলে যায়। তবে এতে ইঞ্জিনের ক্ষতি হয়নি। লাইনে উঠানোর পর ইঞ্জিনটি স্বাভাবিকভাবেই চলতে পারছে।