মো: ওমর ফারুক মুন্সী :
কুমিল্লার দেবিদ্বারে ওয়ারিশকৃত সম্পদ চাওয়ায় বৃদ্ধা খালা, দুই বোন ও এক ভাইকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া নামে এক আইনজীবীর বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (১০ডিসেম্বর) সকালে দেবিদ্বার উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের মধ্যনগর গ্রামে আত্মীয়ের বাড়িতে এসে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া কুমিল্লার বাদশা মিয়ার বাজার এলাকার মৃত অ্যাডভোকেট শাহ জাহান ভূঁইয়ার ছেলে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পেশ করেন, অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়ার বৃদ্ধা খালা রেশমা বেগম। এছাড়াও আরও বক্তব্য রাখেন তার আপন বোন তাহমিনা আক্তার রুমা, প্রতিবন্ধী বোন চাঁদ সুলতানা শিমু ও ছোট ভাই মামুনুল ইসলাম ভূঁইয়া।
বক্তব্যে বৃদ্ধা রেশমা বেগম বলেন, আমার বাবা অ্যাডভোকেট এম এ রফিক মারা যাওয়ার পূর্বে আমার দুই বোন ও আমাদের সন্তানদের নামে তার যাবতীয় সম্পদ অসিয়ত করে যান। আমার বাবা মারা যাওয়ার পর আমার বোন নাছিমাও মারা যান। এরপর তারই ছেলে সাইফুল ইসলাম আমাদের আমার বাবার সব সম্পত্তি জাল দলিল করে আত্মসাৎ করে আমাদের বাড়ি থেকে বের করে দেয়। আমি এই বৃদ্ধ বয়সে মানুষের বাড়ি বাড়ি যাযাবরের মত থাকি। আমি যতটুকু সম্পদ পেয়েছি আমার মৃত বড়বোনের সন্তানারা সমান ভাগ পেয়েছে। অথচ সাইফুল একাই সব ভাগ দখল করছে। সে তার আরও তিন ভাইবোনকেও বাড়ি থেকে বের করে দেয়। আমরা বাড়ি থাকাবস্থায় সাইফুল ও তার স্ত্রী পানি ,গ্যাস ও বিদ্যুৎ লাইনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় যাতে আমি বাড়ি থেকে চলে যাই। আমি না যাওয়ায় লোকজন দিয়ে আমাদের বাড়ি থেকে বের করে দেয় ।
বক্তব্যে ভুক্তভোগী রেশমা বেগম আরও বলেন, আমার বাবার কোন ছেলে সন্তান না থাকায় তিনি আমাদের দুই বোন ও নাতি-নাতনিদের নামে সব সম্পত্তি ওয়ারিশ করে দেন। ওই সম্পত্তির আমার বড় বোনের ছেলে সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া তার তিন ভাই-বোনের নামে থাকা সম্পদও আত্মসাৎ করেছে। তারাও বর্তমানে আমার মত বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে থাকছে। তাদের নিদিষ্ট কোন থাকার জায়গা নেই। সাইফুল আমাদের প্রত্যেকের নামের সম্পত্তি জাল দলিল করে আত্মাসাৎ করছে। আমরা আদালতে তার বিরুদ্ধে পৃথক চারটি মামলা দায়ের করেছি, মামলাগুলো বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে।
বক্তব্যে অভিযুক্ত সাইফুলের বোন তাহমিনা আক্তার রুমা, ছোট ভাই মামুনুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, আমার ভাই ভুয়া আইনজীবীর ছদ্মবেশে নানা অপকর্ম করছে। সে আমার মা ও নানাকে তিলে তিলে হত্যা করেছে। সম্পত্তির লোভে সে আমার নানাকে চিকিৎসার কথা বলে আট দিন অজ্ঞাত স্থানে আটক রেখে দলিলে টিপসই নেয়। আমরা তাকে বারবার নানাকে কোন হাসপাতালে রাখা হয়েছে জিজ্ঞসা করলেও সে বলেনি। নানার কোন ছেলে সন্তান না থাকায় আমরা মা সহ নানার বাড়িতেই থাকতাম। আমার মা, নানা ও নানি মারা যাওয়ার পর সাইফুল ও তার স্ত্রী মিতুল আমাদের কুমিল্লার পশ্চিম রেসকোর্স বাদশা মিয়ার বাজার এলাকার (মুসাফের) বাড়ি থেকে বের করে দেয়। আমরা এখন পথে পথে ঘুরছি। আমার বাকপ্রতিবন্ধী বোন শিমুকেও পাশবিক নির্যাতন করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। প্রতিবন্ধী বোন শিমু ও ভাই মামুনুল হকের বিয়ের বয়স পার হলেও সাইফুল সম্পত্তিতে ভাগ বসাবে এই জন্য তাদের বিয়েও দেয়নি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম ভুঁইয়া বলেন, আমার বিরুদ্ধে যা অভিযোগ আনা হয়েছে সব মিথ্যা। এ বিষয়ে মামলা চলমান রয়েছে। তারা যা বলছে এগুলো তো প্রমাণের বিষয়। ভুক্তভোগীরা আপনার স্বজন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার কোন ভাই বোন কেউ নেই