মোঃ রেজাউল হক শাকিল, ব্রাহ্মণপাড়া ( কুমিল্লা ) প্রতিনিধি
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করে বিষমুক্ত নানা জাতের শীতকালীন সবজি চাষ করে অধিক লাভের আশা করছেন প্রান্তিক কৃষক সোহেল হক। ফসল উৎপাদনে পরিশ্রম ও খরচ কম হয় বলে মালচিং পদ্ধতি ব্যবহারে ঝুঁকছেন অন্যান্য কৃষকরাও।
কৃষক সোহেল হক উপজেলার সদর ইউনিয়নের মহালক্ষীপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি একজন প্রান্তিক সবজি চাষি। এর আগেও তিনি বিদেশি সবজি ক্যাপসিকাম ও স্কোয়াশ চাষ করে আলোচিত হয়েছিলেন।
স্থানীয় কৃষি বিভাগ জানায়, মালচিং কম পরিশ্রম ও স্বল্প ব্যয়ে বিষমুক্ত অধিক সবজি উৎপাদনের একটি পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি। বিভিন্ন ধরনের বস্তু দিয়ে সবজি ক্ষেতকে বিশেষ পদ্ধতিতে ঢেকে দেয়ার পদ্ধতিকে মালচিং পদ্ধতি বলে। মালচিং আধুনিক চাষাবাদের একটি উন্নত পদ্ধতি। এর ফলে জমির ফসল দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং জমিতে সবজির ভালো ফলন হয়। বিশেষ পদ্ধতিতে জমি ঢেকে রাখা হয় বলে আগাছার বিড়ম্বনা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। সবজি চাষে আধুনিকীকরণের ছোঁয়া লাগায় প্লাস্টিক মালচিংয়ের ব্যবহার প্রান্তিক কৃষকদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কৃষক সোহেল হক মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করে বিষমুক্ত শীতকালীন নানা ধরনের সবজির আবাদ করেছেন। এসব সবজি ক্ষেতের ফসল পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি। বছরের সব মৌসুমেই বাজারে টমেটোর বিশেষ চাহিদা থাকে। যে কারণে তিনি এ বছর ৩৯ শতক জমিতে বাহুবলী জাতের উচ্চফলনশীল টমেটো আবাদ করে অধিক লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। এ ছাড়াও কৃষক সোহেল হক তার ২১ শতজ জমিতে কেরালা জাতের উচ্চফলনশীল শিম, ১৮ শতক জমিতে বিদেশি সবজি ক্যাপসিকাম ও ১৪ শতক জমিতে দেশী জাতের টমেটোর আবাদ করেছেন। ভয়াবহ বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বাম্পার ফলনের আশায় তিনি তার আবাদকৃত জমিগুলোতে নিরলসভাবে শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন।
কৃষক সোহেল হক এ প্রতিনিধিকে জানান, উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী এ বছর তিনি মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করে নানা জাতের বিষমুক্ত উচ্চফলনশীল সবজির আবাদ করেছেন। কৃষি অফিসের পরামর্শের পাশাপাশি তিনি ইউটিউব থেকেও পরামর্শ নিচ্ছেন। উন্নত পদ্ধতি মালচিং পেপার ও ভার্মিং কম্পোস্ট ব্যবহার করে তিনি বাহুবলী জাতের টমেটো, কেরালা জাতের শিম, বিদেশি সবজি ক্যাপসিকাম, দেশী জাতের টমেটোসহ নানা ধরনের সবজি আবাদ করেছেন। বড় কোনো দুর্যোগের কবলে না পড়লে এ বছর ভালো ফলনের আশা করছেন তিনি। তার আবাদকৃত এসব জমি থেকে অধিক ফসল উৎপাদন করে এ বছর অধিক লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তিনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মাসুদ রানা বলেন, মালচিং পদ্ধতি ব্যবহারের কারণে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বিষমুক্ত সবজি চাষ নিশ্চিত হচ্ছে। আশা করছি এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি না হলে সবজির বাম্পার ফলন হবে।
তিনি বলেন, কৃষক সোহেল হক বরাবরই সবজি চাষ করে এ উপজেলায় আলোচিত হচ্ছেন। বেশি ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যে উন্নত জাত নির্বাচন, পোকামাকড় ও রোগবালাই দমনসহ নানা বিষয়ে কৃষক সোহেল হকসহ উপজেলার প্রান্তিক কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।