মোঃ রেজাউল হক শাকিল।।
ব্রাহ্মণপাড়া ( কুমিল্লা ) প্রতিনিধি
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী মহাসচিব অধ্যক্ষ শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেছেন, 'ছাত্র-জনতার গণ বিপ্লবে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন হয়েছে। হাসিনা মনে করেছিল কেয়ামত পর্যন্ত সে ক্ষমতায় থাকবে। আল্লাহ পাকের রহমতে এদেশের ছাত্র-জনতা দেখিয়ে দিয়েছে যত বড় স্বৈরাচারই হোক এক সময় এদেশে টিকতে পারবে না।'
শনিবার ( ১৯ অক্টোবর ) বিকেলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় কর্মসূচি ৯ দফার দাবিতে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা শাখার আয়োজনে ব্রাহ্মণপাড়া ভগবান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এক গণ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেন, 'এদেশে এখন নতুন করে চাঁদাবাজি শুরু হয়েছে। নতুন করে টেন্ডারবাজি ও ধান্দাবাজি শুরু হয়েছে। যারা এসবের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছেন তাদেরকে উচ্চস্বরে বলতে চাই, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কিন্তু এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তুলছে। তাদের বলে দিতে চাই, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এদেশের জনগণের পক্ষে এবং পাশে রয়েছে। কেউ যদি চাঁদাবাজি করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ তার প্রতিবাদ করবে এবং প্রতিরোধ করবে।
তিনি বলেন, এখন যারা বলছে আমরা শান্তি দেব, শান্তি দেব। আমরা তাদের চেহারাও কিন্তু চিনি। তারা যদি তাদের চরিত্র না পাল্টায় তাদের দ্বারা এদেশের মানুষ শান্তি পাবে বলে আশা করা যায় না। তাদের শিক্ষার জন্য গত ৫ আগস্ট একটি জ্বলন্ত উদাহরণ। এ দেশে আর কোনো জুলুমবাজি মেনে নেওয়া হবে না।' এ দেশের ছাত্র জনতার মধ্যে বিবেক জাগ্রত হয়েছে।
তিনি বলেন, 'গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ বিপ্লবে সংঘটিত গণহত্যার বিচার করতে হবে। দূর্নীতিবাজদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। যারা অবৈধ সম্পদ গড়েছে তাদের অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে হবে। ফ্যাসিস্ট ও দুর্নীতিবাজদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে এবং সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাস্তবায়ন করতে হবে। এ দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। '
তিনি আরও বলেন, 'অসংখ্য শহীদের রক্তের বিনিময়ে ১৯৭১ সালে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছিলাম। তার আগেও স্বাধীনতার যুদ্ধ হয়েছিল। সব আন্দোলনেই এদেশের মানুষ চেয়েছিল শান্তি। আমরা আন্দোলন ও সংগ্রামের মাধ্যমে চেয়েছিলাম বৈষম্যহীন একটি বাংলাদেশ গড়তে। আমরা যতই বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছি বিগত দিনে যারাই ক্ষমতায় এসেছে তারা ততই বৈষম্য বাড়িয়েছে। সদ্য পরাজিত হওয়া স্বৈরাচার সরকার নিজেদেরকে বিশ্বের অন্যান্য পরাশক্তির চাইতে আরও বেশি শক্তিশালী মনে করত। আল্লাহ তায়ালা তার কুদরত দেখিয়েছেন। তাদের অশান্তিপূর্ণ ক্ষমতার অবসান ঘটেছে।'
তিনি বলেন, 'ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির চরমোনাই পীর সাহেবের দলের নেতাকর্মীদের শরীরের মধ্যে এক টাকারও দুর্নীতির রক্ত নেই। চুরির ও লুটেরার টাকায় তাদের শরীরে রক্ত গড়ে ওঠেনি। এজন্য আমাদের সিদ্ধান্ত দিতে হবে বাংলাদেশে যদি শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হয় তবে অবশ্যই আমাদেরকে ইসলামের ছায়াতলে আসতে হবে। ইসলাম ছাড়া এদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়নি এবং হতেও পারে না।'
গণ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা শাখার সভাপতি মুফতি দেলওয়ার হোসাইন সাঈদ। সঞ্চালনা করেন জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ বুড়িচং উপজেলা শাখার সেক্রেটারি হাফেজ মাওলানা মুফতি ওমর ফারুক।
এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় দাওয়াহ বিষয়ক সম্পাদক ও জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের শাইখুল হাদীস আল্লামা মাহবুবুর রহমান আশরাফী, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ কুমিল্লার বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ্ব কামাল উদ্দিন আহমেদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কুমিল্লা উত্তর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মদ নূর হোসাইন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কুমিল্লা মহানগর শাখার সভাপতি মাওলানা রাশেদুল ইসলাম রহমতপুরী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কুমিল্লা উত্তর জেলা শাখার সহ-সভাপতি মাওলানা কাজী শামসুল হক, ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ কুমিল্লা উত্তর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মুফতি রাশেদুল ইসলাম, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ কুমিল্লা উত্তর জেলা শাখার সভাপতি হোসাইন আহমদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বুড়িচং উপজেলা শাখার সভাপতি মাওলানা গাজীউল হাসান। এ ছাড়াও এ সময় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়ার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।