মো: ওমর ফারুক মুন্সী :
কুমিল্লার দেবিদ্বারে এক শ্রমিককে হত্যার পর তার মরদেহ মাটিতে পুঁতে রাখার চারদিন পর উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির নাম নুরুল ইসলাম (৫৫)। সে হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার বরকান্দি গ্রামের মোকলেস মিয়ার ছেলে। হত্যার এ ঘটনায় নোয়াজ আলী নামে অপর এক শ্রমিককে আটক করেছে পুলিশ। আটক নোয়াজ আলী একই এলাকার মৃত আবদাল আলী ছেলে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার এ ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন নোয়াজ আলী।
শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০ টায় দেবিদ্বার থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। পুলিশের বরাতে আটক নোয়াজ আলী জানায়, প্রায় চার বছর আগে নুরুল ইসলামের সাথে আর্থিক লেনদেন নিয়ে দ্বন্ধ শুরু হয়। সেই সময়ে নোয়াজ আলীর একমাত্র পুত্র শিমুল অসুস্থ হয়ে মারা যায়। ওই সময় নোয়াজ আলী ধারণা করেন, নুরুল ইসলামই কবিরাজের মাধ্যমে তাবিজ করে তার ছেলেকে মেরে ফেলেছে। এর কিছুদিন পর পুত্র শোকে নোয়াজ আলীর স্ত্রীও মারা যায়। আর এ সব কিছুর জন্য দায়ী নুরুল ইসলাম। এরপর থেকেই নোয়াজ আলী প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে উঠে। চলতি বছরের ২১ সেপ্টেম্বর (শনিবার) নুরুল ইসলামকে বাড়ি থেকে কাজের কথা বলে দেবিদ্বার উপজেলার জাফরগঞ্জ ইউনিয়নের পিরোজপুর গ্রামে নিয়ে আসে নোয়াজ আলী। তারা একটি টিনের ছাপড়া ঘর ভাড়া নিয়ে সেখানে ঘুমাত। পরে সুযোগ বুঝে গত ২৩ সেপ্টেম্বর রাত ৩ টার দিকে ঘুমন্ত অবস্থায় পিটিয়ে নুরুল ইসলামকে হত্যার পর ওই ঘরের মাটিতে পুঁতে রাখে মরদেহ।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ইদ্রিস মিয়া জানান, পিরোজপুরে সড়কের পাশে একটি পরিত্যক্ত ছোট দোকান ঘরে নোয়াজ আলী থাকতো। স্থানীয় এক ব্যক্তি শুক্রবার সকালে ওই ঘরের কাছে গিয়ে দেখেন মাটির উপরে হাতেরআঙ্গুল দেখা যায়। পরে তার চিৎকারে লোকজন এসে দেখেন ঘরের ভিতরে লাশ পুঁতে রাখা হয়েছে। পরে স্থানীয়রা পুলিশকে জানালে নোয়াজ আলী পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। সে সময় গ্রামবাসী নোয়াজ আলীকে আটক করে পুলিশে দেয়।
এ বিষয়ে দেবিদ্বার থানার ওসি (তদন্ত) শাহিনুল ইসলাম জানান, লাশ ময়না তদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে এবং আটক নোয়াজ আলী হত্যার দায় স্বীকার করে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে।