মো: ওমর ফারুক মুন্সী :
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক এমপি ইঞ্জি.মঞ্জুরুল আহসান মুন্সি নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, দেশ এখন শান্ত হয়েছে, কোন রকম মারামারি হানাহানি করবেন না। মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দিবেন। হিন্দুদের ধর্মীয় উপাসনালয় ও বাড়িঘর পাহাড়া দিবেন, রাষ্ট্রীয় কোন সম্পদে হাত দিবেন না।
গতকাল বুধবার (৭ আগষ্ট) বিকালে এবিএম গোলাম মোস্তফা স্টেডিয়ামে উপজেলা বিএনপির আয়োজন একটি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেছেন তিনি। সাবেক উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মো. নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় সাবেক এই এমপি আরও বলেন, আজকে ছাত্রজনতার বিজয় হয়েছে, সাধারণ ছাত্ররা দেশকে শত্রæমুক্ত করে দেশ ও মানুষকে বাঁচিয়েছেন। আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। এই বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনে দেবিদ্বারে ১০জন ছাত্র শহীদ হয়েছেন। আমি তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করছি। সব শেষে রুবেল নামে বিএনপির একজন কর্মীকে গুলি ও কুপিয়ে করে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে এবং যারা এগুলো করেছে তাদের নামের লিষ্ট এখন আমার হাতে, পুলিশ প্রশাসন যখন আসবে তখনই আমরা মামলা করব।
দেবিদ্বার উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব মো. নজরুল ইসলাম সরকারের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, উপজেলা বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মো. রেজবিউল আহসান মুন্সি, সাবেক পৌর বিএনপির সভাপতি প্রফেসর সুলতান আহমেদ কবির।
তিনি তাঁর রাজনৈতিক জীবন নিয়ে বলেন, ১৯৭০ সালের ১৫ অথবা ১৬ ডিসেম্বর যেদিন আমি প্রথম দেবিদ্বারের মাটিতে পা রেখেছিলাম সেদিন থেকে আমার জীবনের সব কিছু ব্যয় করে আপনাদের জীবনমান উন্নয়ন করার চেষ্টা করেছি। আমি কতটুকু পেরেছি এর বিচারের দায়ভার আপনাদের হাতে ছেড়ে দিলাম। আপনারা জানেন, গত ১/১১ এর সময় আমাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমার হাতে হাতকড়া পড়িয়ে খোলা জীপে মধ্যে বসিয়ে পুরো দেবিদ্বার ঘুরানো হয়েছে। আমার দোষ ছিল কি আমি কাউকে অন্যায়-দুর্নীতি করতে দিতাম না। তারা আমাকে অপমান অপদস্ত করেছেন কিন্তু এরপরও আমাকে তারা দাবিয়ে রাখতে পারেনি। আমি আপনাদের সাথেই ছিলাম। তিনি আরও বলেন, যেই আওয়ামীলীগ অনির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় এসেছিল আমি যেই রাস্তাঘাট, ব্রীজ-কালর্ভাট তৈরী করে রেখে গিয়েছিলাম সেগুলো সংস্কার পর্যন্ত করতে পারেনি, সব লুটপাট টাকা করে নিজেরা বিরাট পয়সাওয়ালা হয়েছেন। তিনি আরও বলেন, মোস্তফা (সাবেক সংসদ সদস্য) তাঁর বাড়ির কাছে মানুষের জমির ওপর সরকারি অনুদানে একটি শালঘর কলেজের নাম পরিবর্তন করে সেখানে নিজের নামে নামকরণ করেছেন। আমি যদি বেঁচে থাকি আর আগামীতে নির্বাচিত হই, ওই কলেজের নাম আবারও শালঘর কলেজ নামে নামকরণ করা হবে। এরপর আমি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নামে জমি ক্রয় করে শালঘরে একটি বালিকা বিদ্যালয় করেছিলাম একতলা ভবন করেছিলাম। সেই স্কুলটাকে মোস্তফা বন্ধ করে দিয়েছে। এগুলো আমি ভুলে যাইনি, এগুলোর প্রতিশোধ আমাদেরকে নিতে হবে, প্রতিশোধ না নিলে মনে শান্তি পাবো না। তবে প্রতিশোধ নিতে গিয়ে এখন কোন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবেন না। নিয়মতান্তিকভাবে নির্বাচন করে বিজয়ী হওয়ার পর তাদেরকে শাস্তির ব্যবস্থা করব, দরকার হলে কবর থেকে উঠিয়ে হলেও শাস্তির ব্যবস্থা করব।
সাবেক এই এমপি বক্তব্যে আরও বলেন, এই দেবিদ্বারে ১৯৭০ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত মাদকমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত ও সুদমুক্ত এলাকা হিসেবে পরিচিতি লাভ পায় , কিন্তু আজকে আবার সেই পুরনো জিনিস চালু হয়েছে। যারা এই ব্যবসায় করছেন আমি আপনাদের বলে দিতে চাই, সাবধান হয়ে যান, অন্যথ্যায় আগের মত আর শাস্তি নয়, মৃত্যু পর্যন্ত জেলে থাকতে হবে, এটা আমি বলে গেলাম।
তিনি পুলিশের উদ্দেশ্যে বলেন, পুলিশ আর এখন আগের মত করবে না। তাদের দুর্নীতি পরায়ন উচ্চপদস্ত কর্মকর্তারা পুলিশের মেরুদন্ড ভেঙে দিয়েছে। পুলিশ এখন নিয়মতান্ত্রিক কাজ করবে।
তিনি ড. মো. ইউনুছ সম্পর্কে বলেন , আমি আশা করব, আগামী তিন মাসের মধ্যে আমরা যাতে নির্বাচনে যেতে পারি। সে ব্যবস্থা যেন তিনি করেন। আমার বয়স এখন ৭৬ বছর, সেই ১৯ বছর বয়সে আপনাদের কাছে এসেছি আজ পর্যন্ত আছি আমার মৃত্যুর আগে যাতে আমি আরেকবার আপনাদের সেবা করে যেতে পারি। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন।