কুমিল্লা প্রতিনিধি ||
কুমিল্লায় মসজিদের টাকা নিয়ে দুপক্ষের দুই দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় ১৯টি বসতঘর ভাঙচুরসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। মঙ্গলবার (১৮জুন) জেলার দেবিদ্বার উপজেলার গুনাইঘর উত্তর ইউনিয়নের বাকসার গ্রামে রাত ৯টায় এবং একই রাত সাড়ে ১২টায় এ সংঘর্ষ হয়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বাকসার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ কমিটির সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ ও বর্তমান সেক্রেটারি মনির হোসেনসহ স্থানীয় লোকজন মসজিদের টাকা নিয়ে রাত ৯টায় এক বৈঠকে বসেন। ওই সময় কথা কাটাকাটির জেরে দুই পক্ষের লোকজন বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এর জেরে রাত সাড়ে ১২টায় ফের দু'পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
বাকসার গ্রামের এক বিধবা নারী নাসিমা আক্তার। এ ঘটনায় তার বসতঘর ভাঙচুর হয়েছে। স্বামীর রেখে যাওয়া ঘরটি ভাঙচুরের পর থাকার উপযোগী নয়। সন্তানদের নিয়ে পথে বসার অবস্থা তার। সে জানায়, আমার পরিবারের কেউ এই দ্বন্ধে ছিল না। আমার বাপের বাড়ির লোকজনের সাথে ঝগড়া লেগে আমার মাথা গুজার ঘরটা এককবারে শেষ করে ফেলেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাকসার বাজারের তিনজন দোকানী জানায়, এই মসজিদ কমিটির দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিন ধরে চলছে। কখনো জায়গা নিয়ে। কখনো টাকা। নিয়ে কখনো কমিটির পদ পদবী নিয়ে। কয়েক মাস আগে মসজিদ কমিটির সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদের এক ফেসবুক পোস্টে কমেন্ট করে মসজিদের টাকা চুর বলায় তিনিও এর উত্তর দিয়ে হুমকি প্রদান করেছিলেন। এ হুমকি ও মসজিদের টাকা নিয়ে সংঘর্ষের সুত্রপাত হয়েছে।
বাকসার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ কমিটির সেক্রেটারি মনির হোসেন জানায়, মসজিদ কমিটির সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদের কাছে মসজিদের পাওনা টাকা চাওয়ায় তার ক্যাডার বাহিনী মুসল্লিদের উপর অতর্কিত হামলা করেন। এ সময় মুসল্লি ও কালাম বাহিনীর মধ্যে দাওয়া-পাল্টাদাওয়া হয়।
মসজিদ কমিটির সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদের এক সমর্থক হেলাল জানায়, মসজিদের সাথের পুকুটা আমাদের ২৭। আমরা পুকুরের মাছ বিক্রির টাকাটা মসজিদে দান করতে চেয়েছিলাম সামাজিক ভাবে। এই বিষয়টা বর্তমান কমিটি মানতে পারেনি। এ নিয়ে রাতে বৈঠকে বসলে বর্তমান কমিটির সেক্রেটারির লোকজন আমার উপর হামলা করে। ওই সময় আমাদের সাথে থাকা কয়েকজন ও তাদের সাথের লোকজনের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এ ঘটনা কে কেন্দ্র করে রাত সাড়ে ১২ টা ১২০ থেকে ১৫০জন যুবক দেশীয় অস্ত্র রামদা, লাঠিসোটা নিয়ে আমাদের বাড়িঘরে হামলা করেছে। হামালা অন্তত ১৯টি বসতঘর ভাঙচুর ও ৫জন আহত হয়েছে।
দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ নয়ন মিয়া জানায়, মসজিদ কমিটি মসজিদের টাকা নিয়ে বৈঠকে বসেছিল। তখন কথা কাটাকাটি ও পরে সংঘর্ষ হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বাড়িঘর ভাঙচুরের আলামত পেয়েছেন । তবে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।