★ক্যাম্পাসে না এসেও গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার সম্মানী গ্রহণ করার অভিযোগ
★ নেপথ্যে শিক্ষকদের ওপর ভিসি কর্তৃক হামলা
কুবি সংবাদদাতা:
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে ভিসি অধ্যাপক ড. এএফএম. আবদুল মঈনের কুশপুত্তলিকা তৈরি করে পদত্যাগ দাবি করছেন শিক্ষকরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক ও গোল চত্বরের পাশে ডাস্টবিনের ওপর রশি দিয়ে এ কুশপুত্তলিকা টাঙানো হয়।
শুক্রবার (১০ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্ত্বর ও প্রধান ফটকের সামনে এ চিত্র দেখা যায়।
শিক্ষকদের ওপর হামলা ও ক্যাম্পাসে না এসেও ‘গ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার সম্মানী গ্রহণ করায় এধরনের প্রতিবাদ করা হয়েছে বলে শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ জানায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, কুশপুত্তলিকার মাথার অংশে রয়েছে ভিসির ছবি। তার মাথায় একটি শিং রয়েছে। কুশপুত্তলিকার হাত দুইটি প্রসারিত রয়েছে। বুকের মাঝে ব্যানার ঝুলানো সেখানে দেখা যায় ভিসি কনুই দিয়ে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষককে মারছেন। এছাড়াও ভিসির বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগে পদত্যাগ করা শিক্ষকদের পদত্যাগপত্রের ছবি সহ ব্যানার ঝুলিয়েছেন তারা।
এছাড়াও গত পাঁচ দিন ধরে ভিসির পদত্যাগের দাবিতে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান বলেন, আমরা শিক্ষকদের সমস্যা নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছি। সর্বশেষ ২৮ তারিখ শিক্ষকদের ওপর সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা করেছেন। এনিয়েও কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন নাই। আজকে তিনি ক্যাম্পাসে না এসেও গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার সম্মানী গ্রহণ করছেন। এর প্রতিবাদে আমরা তার কুশপুত্তলিকা স্থাপন করেছি।
‘অভিনব’ এই প্রতিবাদের বিষয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান কাজী এম. আনিছুল ইসলাম বলেন, সারা বিশ্বে প্রতিবাদের অনেক রকমের ভাষা রয়েছে এটি তারমধ্যে একটি। আমি শিক্ষক সমিতির সকল দাবি দাওয়ার পক্ষে একমত। তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে এধরনের প্রতিবাদ উচিত নাকি অনুচিত সে বিষয়ে কিছু বলতে চাইনা।
এ বিষয়ে নিয়ে কথা বলতে ভিসি আবদুল মঈনকে কয়েকবার কল দিলেও পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি শিক্ষক সমিতির নির্বাচনের পর ভিসির কক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময় ও কিছু দাবি দাওয়ার বিষয়ে কথা বলতে গেলে দুইজন কর্মকর্তা ও ছাত্রলীগের সাবেক সদস্যরা শিক্ষকদের ওপর হামলা করেন। এরই জেরে তিন দফা ক্লাস বর্জনের পাশাপাশি সাত দফা দাবি জানিয়ে আসছিল শিক্ষক সমিতি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ভিসি, ট্রেজারার ও প্রক্টরের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন সাধারণ শিক্ষকরা। সবশেষ, গত (২৮ এপ্রিল) শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচিতে ভিসি, ট্রেজারার ও প্রক্টরসহ ভিসিপন্থী সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতারা শিক্ষকদের কিল, ঘুষি ও ধাক্কা দিয়ে প্রশাসনিক ভবনের অবস্থান দখলে নেন। এরপর শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন শুরু করলে বিশ্ববিদ্যালয় ও হলগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে প্রশাসন। পরবর্তীতে শিক্ষক সমিতি ভিসির পদত্যাগের দাবিতে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে।