কুবি সংবাদদাতা:
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) ভিসি, ট্রেজারার ও প্রক্টরসহ সাবেক শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ৩য় দিনেও চলছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন।
বৃহস্পতিবার (২ মে) বেলা সাড়ে এগারোটায় কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সামনে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
এসময় হামলায় আহত প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মুর্শেদ রায়হান (হিমু) ও লোক প্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. জান্নাতুল ফেরদৌস (লতা) এর ওপর হামলার প্রতিবাদে বিভাগের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেন।
এসময় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. সাদেকুজ্জামান বলেন, 'এই প্রশাসনের নৈতিক স্থলন হয়েছে। শান্তিপূর্ণ অবস্থানে একজন ভিসি যেভাবে মুর্শেদ রায়হান হিমুকে পিছন থেকে আঘাত করেছে তা মধ্যযুগের বর্বরতাকে ছাড়িয়ে গিয়েছে। ভিসিসহ যারা শিক্ষকদের উপর হামলার নেতৃত্ব দিয়েছে তাদেরকে বিচারের আওতায় আনা হোক। এছাড়া, আমি দাবি জানাই, ভিসিকে স্বীয় পদ হতে অতিদ্রুত অপসারণ করে এই সংকট সমাধান করা হোক।
লোক প্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নাহিদুল ইসলাম বলেন, শিক্ষকের ওপর ভিসি হাত তোলার ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে নেই। একজন ভিসি হিসেবে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়কে ম্যানেজ করতে ব্যর্থ হয়েছন। গায়ে হাত তোলার মতো নোংরা ও বর্বর কাজ তিনি করেছেন। উনার কাছ থেকে শিক্ষার্থীরা কী শিখবে? আপনি (ভিসি) এখানে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন।
এসময় সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের বক্তব্যে শিক্ষকদের ওপর হামলার বিচার দাবি করেন। পাশাপাশি দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় ও হল সমূহ খুলে দেয়ার আহ্বান জানান।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি শিক্ষক সমিতির নির্বাচনের পর ভিসির কক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময় ও কিছু দাবি দাওয়ার বিষয়ে কথা বলতে গেলে দুইজন কর্মকর্তা ও ছাত্রলীগের সাবেক সদস্যরা শিক্ষকদের ওপর হামলা করেন। এরই জেরে তিন দফা ক্লাস বর্জনের পাশাপাশি সাত দফা দাবি জানিয়ে আসছিল শিক্ষক সমিতি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ভিসি, ট্রেজারার ও প্রক্টরের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছিল শিক্ষকরা। সবশেষ, গত (২৮ এপ্রিল) ভিসি, ট্রেজারার ও প্রক্টরসহ ভিসিপন্থী সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতারা শিক্ষকদের কিল, ঘুষি ও ধাক্কা দিয়ে প্রশাসনিক ভবনের অবস্থান দখলে নেন। এরপর শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন শুরু করলে বিশ্ববিদ্যালয় ও হলগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে প্রশাসন।
এর আগে গত বুধবার মানববন্ধনে শিক্ষার্থীদের হলে থাকার বিষয়ে একাত্মতা পোষণ করেন একজন হল প্রাধ্যক্ষ ও হাউজ টিউটর। এছাড়াও অন্যান্য প্রাধ্যক্ষরাও সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তকে অমান্য করে মুঠোফোনে শিক্ষার্থীরা হলে থাকতে পারবেন বলে নিশ্চিত করেন।