মো: মোশাররফ হোসেন মনির, মুরাদনগর ।।
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ধামঘর ইউনিয়নের খুরুইল সিনিয়র আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ মো. আনিসুর রহমান মোল্লার বিরুদ্ধে একই প্রতিষ্ঠানের সহকারি শিক্ষিকাকে শ্লীলতাহানি ও কু-প্রস্তাব, ছাত্রীদের যৌন হয়রানি ও প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ১২টায় মাদরাসার সামনের সড়কে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচী পালন করে ওই প্রতিষ্ঠানের ভুক্তভোগী ওই শিক্ষিকা, ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক ও স্থানীয় এলাকাবাসী।
এসময় ছাত্রছাত্রীরা অধ্যক্ষকে দ্রুত অপসারণের দাবি জানান এবং তা না করা হলে পরীক্ষা ও ক্লাস বর্জনের হুমকি দেয়। মানববন্ধন ও প্রতিবাদ শেষে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আলাউদ্দিন ভূঁইয়া জনীর কাছে ভুক্তভোগীসহ ১৭ জন শিক্ষক ও এলাকাবাসী স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগপত্র দেন এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে ভুক্তভোগী একাধিক শিক্ষিকা ও ছাত্রীরা ফেনীর সিরাজ উদ দৌলা ও নুসরাতের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, আমরা খবরের শিরোনাম হতে চাইনা। এতদিন চুপ থেকেছি, কিন্তু আর না! আমরা না পারি কাউকে কিছু বলতে না পারি সইতে। ফেনীর নুসরাতের মত হতে চলেছে আমাদের অবস্থা। অধ্যক্ষের কু-প্রস্তাবের যন্ত্রনায় আমাদের মাদরাসায় আসা যাওয়া বন্ধ হওয়ার উপক্রম। সে বিভিন্ন সময়ে আমাদেরকে শ্লীলতাহানি ও কু-প্রস্তাব দেয়। সে একবার এক শিক্ষিকা টেঁনে হেঁচরে খালি ক্লাসরুমে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে পরে ওই শিক্ষিকার চিৎকারে মানুষ জড়ো হয়ে তাকে জুতা পিঠা করেছে। এরপর সে এমন কাজ আর করবে না মর্মে প্রকাশ্যে মুচলেখা প্রদান করে। এরপরও তার অপকর্ম থামেনি। আমরা তার দ্রুত অপসারণ চাই।
মাদ্রাসা পরিচালনা পরষদের সাবেক সভাপতি মো. আলমগীর কবির বলেন, তাঁর কাছে মাদরাসার ছাত্রী ও নারী শিক্ষিকারা কেউ নিরাপদ নয়। তার অপকর্মের বর্ণনা দিয়ে শেষ করা যাবেনা। সে মাদরাসার রেজুলেশন বই, আয়-ব্যয়ের হিসাবসহ প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র সরিয়ে ফেলেছে। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়ায় মুরাদনগরে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী মো.বেলাল আহম্মেদ তাকে সাসপেন্ড করে তার বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন ওই মামলায় সে জেলও খেটেছেন। পরে সে ১০ বছর পর বিভিন্ন অসৎ উপায়ে বোর্ড ম্যানেজ করে আবার মাদরাসায় যোগ দেন।
এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন, খুরুইল সিনিয়র আলিম মাদরাসার সাবেক সভাপতি মো. আলমগীর কবির, সহকারি শিক্ষক মো. শাহজাহান, ইংরেজি প্রভাষক ফিরোজুর আলম, বাংলা প্রভাষক মোসা. সেলিনা আক্তার, স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাশেম, আলামুল হুদা মাস্টার, মো. সেলিম, মো. রহুল আমিন সরকার, অভিভাবক সদস্য আহম্মদ মুন্সি, মো. আবদুস সালাম, মাও একরামুল হক, মো. হেলাল মুন্সি প্রমুখ।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ মো. আনিসুর রহমান মোল্লা দোষ স্বীকার করে বলেছেন, আমি এ প্রতিষ্ঠান থেকে স্বেচ্ছায় চলে যাব। এ মর্মে আমি শিক্ষক ও এলাকাবাসীর কাছে লিখিত দিয়েছি।